এম.জে. এফ নিউজ-27 জানুয়ারি
রসুল সা.-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত মিসওয়াক। মিসওয়াক হলো গাছের কাঁচা ডাল দিয়ে দাঁত ঘষা। কাঁচা ডাল দিয়ে দাঁত ঘষার অনেক স্বাস্থ্য উপকার রয়েছে। ইসলামেও মিসওয়াকের গুরুত্বও অপরিসীম।

মিসওয়াকের সত্তরটিরও বেশি উপকার রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হলো মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হওয়া।
রসুল সা. বলেন, মিসওয়াকের সত্তরটিরও বেশি উপকার রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হলো মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হওয়া
অন্য হাদিসে রসুল সা. বলেন, যদি আমি আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তবে অবশ্যই প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম (মিশকাত ৩৪৬)
হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. বলেন, যে নামাজ মিসওয়াক করে আদায় করা হয়, সেই নামাজ মিসওয়াক করা বিহীন নামাজের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি নেকি হয়। (বায়হাকি, সুনানুল কুবরা হা/১৫৯, মুস্তাদরাকে হাকেম ৫১৫)
হযরত আবু উমামা রা. হতে বর্ণিত, রসুল সা. বলেন,
তোমরা মিসওয়াক কর। নিশ্চয়ই মিসওয়াক মুখ পরিষ্কারকারী ও আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ। যখনই জিবরিল আমার নিকট আসেন, তখনই আমাকে মিসওয়াক করার জন্য বলেন। এমনকি আমি ভয় করি যে, আমার ও আমার উম্মতের উপর তা ফরজ করা হয় কি-না। আমার উম্মতের উপর কঠিন হয়ে যাওয়ার ভয় না করলে মিসওয়াক করা আমি উম্মতের উপর ফরজ করে দিতাম। আমি মিসওয়াক করতেই থাকি এমনকি আশঙ্কা করি যে, আমি হয়ত আমার মুখের সামনের দিক ক্ষয় করে ফেলব। (ইবনু মাজাহ ২৮৯, মুসনাদে আহমাদ ২২৩২৩)
রসুল সা. মিসওয়াক করাকে উম্মতের আবশ্যক করে দিতে চেয়েছিলেন। এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, মিসওয়াক একটি ফজিলতপূর্ণ আমল।
রসুল সা. মিসওয়াক করাকে এতটাই গুরুত্ব দিতেন, এতটাই ভালোবাসতেন যে, তিনি মৃত্যুর সময়েও মিসওয়াক করা ছাড়েননি, বরং তিনি যখন মিসওয়াক করতে পারছিলেন না তখন হযরত আয়েশা রা. নিজ থেকে মিসওয়াক চিবিয়ে রসুল সা.-এর মুখে তুলে দিচ্ছিলেন। আর রসুল সা. তা দিয়ে মিসওয়াক করছিলেন।
হযরত ইবনু আব্বাস রা. বলেন,
মিসওয়াকের ১০টি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ১. মহান প্রতিপালকের সন্তুষ্টি ২. শয়তানের অসন্তুষ্টি ৩. ফেরেশতাদের জন্য আনন্দ ৪. আলজিভের সৌন্দর্য ৫. দাঁতের আবরণ দূর করে ৬. চোখকে জ্যোতিময় করে ৭. মুখকে পবিত্র করে ৮. কফ দূর করে ৯. এটি সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত ১০. নেকি বৃদ্ধি করে। (দারাকুতনি ১/৫৮, সিলসিলা জঈফাহ ৪০১৬)
রসুল সা. মিসওয়াক করার ব্যাপারে যেমনিভাবে জোর তাগিদ দিয়েছেন, তেমনিভাবে ডাক্তারি মতেও এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। দাঁতের সঙ্গে খাদ্যকণা জমে যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় তা দূর করার জন্যই মিসওয়াক করা একান্ত প্রয়োজন। তেতো গাছের মিসওয়াকের পরিমাণ এক বিঘত সম হওয়া বাঞ্ছনীয়। আর এর ব্যবহারের নিয়ম হলো, ডান হাত দিয়ে মুখের ডান থেকে আড়াআড়িভাবে ঘষা। দাঁত দৈর্ঘ্যে না ঘষা এবং মেসওয়াক শেষে কাঠিটিকে ভালোভাবে ধৌত করে দাঁড় করিয়ে রাখা উচিত, যাতে পানি শুকিয়ে গিয়ে দুর্গন্ধমুক্ত থাকে।
আল্লামা নববী রহ. বলেন,
সর্বাবস্থায় মিসওয়াক করা মুস্তাহাব, তবে পাঁচটি সময় মেসওয়াক করা বিশেষ মুস্তাহাব। সেগুলো হলো- ১. নামাজের সময়, ২. কুরআন তেলাওয়াতের সময় ৩. অজু করার সময়, ৪. নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়ার পর, ৫. মুখের দুর্গন্ধ দেখা দিলে।’ (শারহুন নাবাবি)
প্রিয় নবী মিসওয়াক করা পছন্দ করতেন। আমাদেরও উচিত মিসওয়াক করা। রসুল কে ভালোবাসলে তার কাজকেও ভালোবাসতে হবে। রসুল সা. বলেন, যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে ভালোবাসে সে আমাকেই ভালোবাসে, আর যে আমাকে ভালোবাসল সে আমার সঙ্গেই জান্নাতে থাকবে (মিশকাত)
মুফতি আবদুল্লাহ তামিম
সূত্র: সময়