গ্রামীণ ব্যাংক/ফাইল ছবি/সংগৃহীত
গ্রামীণ ব্যাংক চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি
সাত দিনের মধ্যে চাকরি স্থায়ী করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়ার হুমকি দিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পরিষদ। এসময় চাকরি স্থায়ী করাসহ বেশকিছু দাবি জানান তারা।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গ্রামীণ ব্যাংক চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন গ্রামীণ ব্যাংক চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি আলাউদ্দিন আল মামুন। তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে দৈনিকভিত্তিক মজুরিতে কাজ করে আসছি। আমাদের ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। কারণ আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়নি। আমরা দেশের নাগরিক হিসেবে অধিকার পেতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “দেশে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যদিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক। এ ব্যাংকে আমরা দৈনিকভিত্তিক কাজের লোক হিসেবে নিয়োজিত। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে আমাদেরকে অস্থায়ীভাবে কাজ করানো হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতো কোনো সুযোগ সুবিধা নেই। সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি, চাকরি স্থায়ী করে মানবেতর জীবনযাপন থেকে আমাদের বাঁচান।”
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, “গ্রামীণ ব্যাংক আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া একটি প্রতিষ্ঠান যার কর্মচারীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। এরকম একটি খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের সঙ্গে এত বৈষম্য ও অনিয়ম হয় এটা অবিশ্বাস্য। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা যে দাবিগুলো করেছেন তার প্রতি আমি পূর্ণ সমর্থন জানাই।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের দাবিগুলো হলো:
» অবিলম্বে দৈনিক ভিত্তিতে পিয়ন-কাম-গার্ড হিসেবে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়োগের ৯ মাস পর থেকে সার্কুলার অনুযায়ী স্থায়ীকরণ এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে যাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে তাদেরও চাকরি স্থায়ীকরণ করতে হবে।
» নিয়োগপত্র, ছবিসহ পরিচয়পত্র, সবেতনে সব প্রাপ্ত ছুটি, বোনাসসহ বাংলাদেশের শ্রম আইন ও আন্তর্জাতিক শ্রম আইন অনুযায়ী প্রাপ্ত অধিকার দিতে হবে।
» গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরিবিধি অনুযায়ী মাসিক বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন, গ্র্যাচুইটি, ঋণ সুবিধাসহ সামাজিক নিরাপত্তার যাবতীয় সুবিধা দিতে হবে।
» আন্দোলন ও সংগঠন দমনে শাস্তিমূলক ছাঁটাই, বদলি বন্ধ করতে হবে।
» আন্দোলনের কারণে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল করতে হবে।
» আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে।
» চাকরি স্থায়ীকরণ করে নিয়োগের শুরু থেকে সব প্রাপ্য পরিশোধ করতে হবে।
