Home ইসলামকবরে যে তিন প্রশ্ন করা হবে

কবরে যে তিন প্রশ্ন করা হবে

by MD JUNAYED SHEIKH

কবর হচ্ছে আখিরাতের প্রথম ধাপ। এখানেই মানুষ প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন। ছবি: সংগৃহীত

জন্ম আছে যার, মৃত্যু আছে তার। প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। আর মৃত্যু-পরবর্তী প্রথম ধাপই হলো কবর। এ থেকে পুনরুত্থান পর্যন্ত জীবনকে বলা হয় আলমে বারজাখ। এ সময়ের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেলে পরবর্তী ধাপগুলো সহজ হবে।

বিখ্যাত সাহাবি হজরত উসমান (রা.) বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, কবর হচ্ছে আখিরাতের প্রথম ধাপ। যে এর আজাব থেকে মুক্তি পাবে, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো সহজ হয়ে যাবে। আর যে মুক্তি পাবে না, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো আরও কঠিন হবে। (তিরমিজি: ২৩০৮) প্রতিটি মানুষকে কবরে ৩টি প্রশ্ন করা হবে।

প্রথমত, তোমার রব কে?

রবের বিষয়ে বেশির ভাগ মানুষ উদাসীন। দুনিয়ায় যে প্রতিপালকের একত্ববাদ (তাওহিদুর রুবুবিয়্যা) স্বীকার না করে, তাহলে কবরে সে  এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে না। তাই সব সময় মহান আল্লাহ অর্থাৎ  প্রতিপালকের একত্ববাদ মেনে চলতে হবে। 
 

সাধারণ মানুষকে যারা রবের আসনে বসিয়েছে তারাও এ প্রশ্নের জবাবে বলবে, ‘লা আদরি’ অর্থাৎ আমি কিছুই জানি না। মানুষ মানুষকে কীভাবে রব বানায়? কোরআনে এসেছে, ‘তারা তাদের ধর্মীয় গুরু ও নেতাদের (মান্য করার দিক থেকে দেবতা) হিসেবে গ্রহণ করেছে।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩১)

দ্বিতীয়ত, তোমার দীন তথা জীবনব্যবস্থা কী?
 

যারা পরিপূর্ণভাবে ইসলামকে আঁকড়ে ধরেছে, তারা এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে। আর যারা দুনিয়ায় ইসলামকে জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেনি তারা বলবে, ‘লা আদরি’ অর্থাৎ আমি কিছুই জানি না। বাস্তব জীবনে মানবরচিত বিধান জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছি। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবে, তা কখনও কবুল করা হবে না, বরং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫)

তৃতীয়ত, তোমাদের কাছে যে লোকটিকে পাঠানো হয়েছে তিনি কে?
 

কবরের সবশেষ প্রশ্নে বলা হবে, তোমার নবী কে, আদর্শ পুরুষ কে ছিল, তুমি কার সুন্নত তথা রীতিনীতি অনুসরণ করতে? যারা অন্যদের আদর্শে জীবন পরিচালনা করেছে তারা বলবে, ‘লা আদরি’ অর্থাৎ আমি কিছুই জানি না। শুধু যারা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিরাত ও সুন্নাহ গ্রহণ করেছে এবং বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করেছে, তারাই এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে।

যারা এ তিন প্রশ্নের যথাযথ জবাব দিতে পারবে, তাদের সম্পর্কে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আসমান থেকে একজন আহবান করে বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে। সুতরাং তার জন্য একটি জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও। এছাড়া তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তখন তার কাছে জান্নাতের সুখ-শান্তি আসতে থাকে এবং তার জন্য তার কবরকে তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেয়া হয়।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর তার কাছে এক সুন্দর চেহারা বিশিষ্ট সুবেশী ও সুগন্ধিযুক্ত ব্যক্তি আসেন এবং তাকে বলেন, তোমাকে খুশি করবে এমন জিনিসের সুসংবাদ গ্রহণ কর। আর এ দিনের ওয়াদাই তোমাকে দেয়া হয়েছিল। তখন সে মৃতব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করবে, তুমি কে? তোমার চেহারা এত সুন্দর যে, কল্যাণের বার্তা বহন করে। তখন সে বলে, অমি তোমার সৎ আমল। (আহমাদ, মিশকাত: ১৫৪২)

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment