Home আন্তর্জাতিকসহায়তা নেই-অফিস বন্ধ, ইউএসএইডের এখন কী হবে?

সহায়তা নেই-অফিস বন্ধ, ইউএসএইডের এখন কী হবে?

by MD JUNAYED SHEIKH

২৮ জানুয়ারি ২০২৫। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ কিছুটা শিথিল করার কথা উল্লেখ করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। কিন্তু এর দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের দেশ মালাউতে বন্ধ হয়ে যায় বেশিরভাগ স্থানীয় দাতব্য সংস্থা। জিডিপি হিসেবে বিশ্বের সপ্তম দরিদ্র এই দেশে চাকরি হারান ৫ হাজার কর্মী।

২ কোটি মানুষের দেশ মালাউয়ে চাকরি হারানো এই ৫ হাজার মানুষের মধ্যে বেশিরভাগই স্বাস্থ্যকর্মী। এমন দাবি করেছেন হেলথ অ্যান্ড রাইটস এডুকেশন প্রোগ্রাম নামের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা মাজিসেকো মাতেম্বা। তিনি বলেন, ‘এখন অনেক মানুষ রোগে আক্রান্ত হবে এবং মরবে।’

আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে আফগানিস্তান–সব জায়গাতেই একই চিত্র। ট্রাম্পের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ কিছুটা শিথিল করার কথা উল্লেখ করে রুবিও সেদিন বলেছিলেন, আমেরিকা আশ্রয়ণ ও ওষুধের মতো মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে। 

আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে আফগানিস্তান–সব জায়গাতেই একই চিত্র। ট্রাম্পের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ কিছুটা শিথিল করার কথা উল্লেখ করে রুবিও সেদিন বলেছিলেন, আমেরিকা আশ্রয়ণ ও ওষুধের মতো মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে আফগানিস্তান–সব জায়গাতেই একই চিত্র। ট্রাম্পের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ কিছুটা শিথিল করার কথা উল্লেখ করে রুবিও সেদিন বলেছিলেন, আমেরিকা আশ্রয়ণ ও ওষুধের মতো মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে। 

এরই মধ্যে ইউএসএইডের বিভিন্ন অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ফ্রিজ করা হয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, চাকরিচ্যুত হয়েছেন কর্মকর্তারা। কেনিয়ার নাইরোবিতে ইউএসএইডের সাবেক পরিচালক ক্যাট আমকুইস্ট নফ বলছেন, ‘বন্ধ করে দেওয়ার পর এসব শিথিলতার ঘোষণা এলেও তা আর কাজে আসছে না। কেননা অর্থ আসার সব পথই তো বন্ধ হয়ে গেল।’

বিশ্বব্যাপী এইডস রোগ মোকাবিলা করতে এবং এই রোগে আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য কাজ করে মার্কিন স্বাস্থ্য তহবিল পিইপিএফএআর। এটি টিকিয়ে রাখতে রুবিও দুটি জরুরি আদেশ দিয়েছিলেন। এর আওতায় যে থেরাপি দেওয়া হয়, তা বেশ ব্যয়বহুল। 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ফাইল ছবি

দক্ষিণ আফ্রিকায় এইচআইভি ও যক্ষ্মার মতো জটিল রোগের প্রতিকারে প্রতি বছর ৪৪ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করে আসছে আমেরিকা। কিন্তু তা একমুহূর্তে থমকে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে সবচেয়ে বড় এইচআইভি ক্লিনিক পরিচালনা করা জেরেমি নিল বলছেন, গত ২৭ জানুয়ারি পিইপিএফএআরের কর্মীদের জানানো হয়, তারা আর কাজে আসতে পারবেন না। ইউএসএইড কী জানায়, সে জন্য বসে আছেন তারা। কিন্তু ইউএসএইড কী কিছু বলতে পারবে? আদৌ জানেন না এসব কর্মীরা।

জোহানেসবার্গে একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা চালানো ফ্রাঙ্কোইস ভেন্টার বলছেন, ‘এই এইচআইভি প্রোগ্রাম বন্ধ করা ঠিক হবে না। এসব দাতব্য কার্যক্রমে কোনো রিজার্ভ থাকে না। এ ছাড়া লোন নেওয়ারও সুযোগ নেই। এভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হতে পারে। এ কারণে এখনই হয়তো এত মৃত্যু হবে না, কিন্তু আমাদের এত বছরের অগ্রগতি আটকে যাবে।’

রুবিওর কথায় নরম সুর থাকলেও এই তিনিই কিন্তু সহায়তা ঠিকমতো না করার জন্য ইউএসএইডের কর্মীদের দায়ী করেন। শিথিল করার পরও এনজিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি বলেন, কীভাবে টাকা পরিশোধ করা যায়, তা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল, এগুলো ঠিক করা হবে। পিইপিএফএআর ও অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী প্রকল্পের আকার ছোট হয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

এদিকে ট্রাম্প আসার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। বিভিন্ন উপায়ে আয় রয়েছে, এমন প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো টিকে যেতে পারে। কিন্তু ইউএসএইডের মতো মডেলে পরিচালিত সংস্থাগুলো থমকে যাবে। কেননা ট্রাম্প প্রশাসন সহায়তা একদম বন্ধ করে দিয়েছে।

ইলন মাস্ক ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

তবে আফ্রিকায় মানুষের রোগ নিয়ে মার্কিন প্রকল্পগুলো এখনো চলমান বলে সেখানে অনেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। হয়তো সরাসরি খাবারও সেখানে যাবে, মিলবে ওষুধও। কিন্তু সংক্রমণ রুখতে যে শিক্ষা দেওয়া হয়, তা এখন বন্ধ হয়ে যাবে। এ নিয়ে মন্তব্য করার মতো হোয়াইট হাউসে কেউ নেই।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথের মানবিক গবেষণা ল্যাবের নির্বাহী পরিচালক নাথানিয়েল রেমন্ড বলছেন, ‘এসব করা হচ্ছে খুব কাণ্ডজ্ঞানহীন ভাবে। এমন করা হলে কী হতে পারে, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র বোঝাপড়া নেই।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হয়তো দাতব্য কিছু কার্যক্রম চালু রাখতে পারেন। কিন্তু ট্রাম্প যেভাবে শুরু করেছেন, রুবিও এসব কতদিন চালু রাখতে পারেন, তা-ই এখন দেখার বিষয়।

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment