সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হলেও অভ্যন্তরীণ সংঘাত থামেনি। এ অবস্থায় দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা ক্রমেই দুরূহ হয়ে উঠছে। সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের বাহিনী ও অপসারিত নেতা বাশারের অনুগত যোদ্ধাদের মধ্যে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার কিছু অংশে তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে। খবর আল-জাজিরার
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর বিরোধী যোদ্ধারা আসাদকে উৎখাতের পর প্রথমবারের মতো গত বৃহস্পতিবার ভয়াবহ সহিংসতায় কয়েক ডজন লোক নিহত হন। লাতাকিয়া ও তারতুস গভর্নরেটে ধারাবাহিক হামলা ও অতর্কিত হামলার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। এই আলাউইত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আবাসস্থল আসাদ পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর শক্তি আরও বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সংঘাতে বেসামরিক লোকও নিহত হচ্ছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, আসাদের অনুগত যোদ্ধারা বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আলাউইত সংখ্যালঘু সদস্যরা সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বেশির ভাগ শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তবে সংঘাতে জড়িত হওয়ায় তাদের জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। তিনি বলেন, আমরা আসাদ অনুগতদের পেছন থেকে তাড়া করেই যাব, যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা আত্মসমর্পণ করে। দ্রুতই অস্ত্র জমা দিতে হবে তাদের।
সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের মতে, সাম্প্রতিক সংঘাতে কমপক্ষে ১২৫ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশিও হতে পারে। আলাউইত সদস্য এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ সিরিয়ার বিভাজনকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
কাতারের হামাদ বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের জননীতি বিভাগের অধ্যাপক সুলতান বারাকাত বলেন, সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে আলাউইতদের বাস। তারা এখন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই সংঘাতে জড়াচ্ছে। আসাদের প্রতি সমর্থনের চেয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাটা এখন তাদের কাছে প্রধান হয়ে দেখা দিয়েছে।