Home দেশপ্রবাসে ছেলের মৃত্যু, লাশ দেখতে মায়ের আর্তনাদ

প্রবাসে ছেলের মৃত্যু, লাশ দেখতে মায়ের আর্তনাদ

by MD JUNAYED SHEIKH

‘ধার-দেনা করে বড় বেটাডারে পাঠাই ছেলাম। ভাবছিলাম এরপর মাইজা বেটাডারে পাঠাব। তারপর তারা দুইজন মিলে ছোটডারে নিলে সবারই একটা পথ ধরাইতে পারতাম। বেটা তো অ্যাকসিডেন্ট করে মইরা গেল।

আমার তো সব শেষ হইয়া গেল। বেটাডার লাশ আনার টাকা পাব কই। আর কিস্তি দেব কীে দিয়ে।’ এভাবেই এভাবেই আর্তনাদ করেন মালয়েশিয়ায় নিহত আব্দুল মাজেদ খানের মা মাজেদা বেগম।

সোমবার (১০ মার্চ) নতুন ভিসার মেডিক্যাল করতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মাজেদ। রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মাহেন্দ্রপুর গ্রামের মাজেদ বিভিন্ন এনজিও ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার করে গত বছরের জুন মাসে মালয়েশিয়া যান তিনি।

মাজেদের মা মাজেদা বেগম বলেন, ‘রবিবার সকাল ১১টার দিকে মাজেদের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। ফোনে কথা বলার সময় আমাকে বলেছিল, আগামীকাল (সোমবার) মেডিক্যাল করাতে যাব।

আমার জন্য দোয়া কইরো। সোমবার দুপুর ২টার দিকে ফোন আসে মাজেদ অ্যাকসিডেন্ট করেছে। সে আর নাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ছেলেকে মালয়েশিয়া পাঠাতে সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিতে হয়েছিল। এই সব টাকায় ঋণ করে আনা।

কয়েকটি সমিতি ও আত্মীয়দের কাছ থেকে এসব টাকা জোগাড় করেছিলাম। ছেলে যাওয়ার পর থেকে তেমন টাকা পাঠাতে পারেনি। মাত্র একবার টাকা পাঠিয়েছিল।’

সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘ব্র্যাক, ব্যুরো বাংলাদেশ, গ্রামীণ ব্যাংক, মাইক্রোফাইন্যান্স প্রগ্রাম (এমএফসি), ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার (ভার্ক), টিএমএস, ভিপিকে ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি। সপ্তাহে প্রতিদিনই আমার কিস্তি দিতে হয়। এক সমিতি থেকে ঋণ এনে আরেক সমিতির কিস্তি দিই। ছেলেটা টাকা পাঠানো শুরু করেছিল। ছেলের লাশ আনার টাকাটাও আমাদের কাছে নেই। কিভাবে আনব। কার কাছে বলব।’

প্রতিবেশী বৃষ্টি খাতুন বলেন, ‘মাজেদের পরিবার অনেক ঋণগ্রস্ত। মালয়েশিয়ায় তার দেবর আবদুল মমিনের কাছেই থাকতেন মাজেদ।’

কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ বলেন, ‘মরদেহ দেশে আনার বিষয়টি প্রবাসী মন্ত্রণালয় দেখে। আমরা আমাদের মতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।’

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment