তরুণ আলেম ও লেখক মাওলানা আল আমিন শাহ গতকাল রাতে সৌদি আরবের জিজান প্রদেশে নিজ কর্মস্থলের পাশে আততায়ীর গুলিতে শাহাদাত বরণ করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ২৬ বছর।
আলেম, হাফেজ, ইমাম, সদা হাস্যোজ্জ্বল তরুণ মাওলানা আল আমিন শাহ সৌদির জিজান প্রদেশে ইমামতি করতেন। অবসর টাইমে ড্রাইভিং করতেন। গতকাল সেখানকার এক পাহাড়ের পাশে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।
তার সম্মানিত উস্তাদ , মালিবাগ চৌধুরীপাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা এনায়েত কবির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন— ” আল আমীন আমাদের চৌধুরীপাড়াতে হেফজ শেষ করে নাহবেমীর পর্যন্ত পড়েছে। চমৎকার কুরআন তেলাওয়াত করতো। তাঁর সুন্দর হামদ নাতে হৃদয় জুড়িয়ে যেতো।
খুব দুরন্ত প্রকৃতির কিন্তু পরোপকারী ছিল। করোনার সময় সে যেভাবে বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার মানুষ তা সহজে ভুলবে না।
কয়েক বছর আগে ওমরায় গিয়েছিলাম। সংবাদ পেয়ে সে খুঁজে খুঁজে আমাদের হোটেল বের করে সাক্ষাৎ করে গেছে। লম্বা সময় কথা হয়েছে। নিজের টাকায় সেখানে গাড়ি কিনেছে। আমাদেরকে খুব আন্তরিকভাবে আপ্যায়ন করাতে চেয়েছিল।”
মরহুম মাওলানা আল আমিন শাহ’র শ্রদ্ধেয় উস্তাদ, জামিয়া ইকরা বাংলাদেশের সাবেক মুহাদ্দিস মুফতি আব্দুস সালাম ফেসবুকে লিখেছেন— ” আল আমিনের মতো এমন আপন ছাত্র এই জীবনে খুব কমই পেয়েছি। তার সকল শিক্ষক বন্ধুবান্ধবদের অনেক প্রিয় ছিলো সে। কয়েক বছর আগে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে সৌদি গেলো, নিজের স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে পূরণ করা শুরু করেছিলো। কদিন আগে ফুটফুটে একটি কন্যার বাবাও হয় সে। দেশে এলেই হৈ হুল্লোড় করে আয়োজন করে দাওয়াত খাওয়াতো তার শিক্ষক বন্ধুবান্ধবদেরকে। মাঝেমাঝেই ফোন করে গল্প করতো।”
তার সহপাঠী ও সৌদি প্রবাসি ইমাম মাওলানা সাইদ আহমাদ জানিয়েছেন — “ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রক্রিয়া শেষ করতে পারলে কয়েকদিনের মধ্যে মরদেহ দেশে নিয়ে আসা হবে।”
মাওলানা আল আমিন শাহ মৃত্যুকালে স্ত্রী ও আট মাস বয়সী এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান রেখে গিয়েছেন। পরিবারে তিন ভাই— মাওলানা আল আমিন শাহ ছিলেন সবার বড় ও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
আল্লাহ তায়ালা মরহুমকে জান্নাতবাসী করুন, পরিবার পরিজনকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুন।