ট্রাম্পের ক্ষ্যাপাটে শুল্কারোপ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে তৈরি পোশাক শিল্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষ্যাপাটে শুল্ক আরোপের কতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে রফতানিকারক দেশে, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা। ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো শুল্কভার উৎপাদকদের কাঁধে চাপানোর চেষ্টা করতে পারে বলে শঙ্কা তাদের। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সুবিধা না দিয়ে উল্টো শুল্কের চাপে ফেলাকে অন্যায্য হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরাও।
যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর যে ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাতে রফতানিকারক দেশ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেই হিসাব মেলাতে সময় লাগলেও ভোক্তা হিসেবে দিন শেষে এর পুরো চাপ বহন করার কথা মার্কিন নাগরিকদেরই। তবে তাদের স্বস্তি দিতে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো পোশাকের দাম কমিয়ে ক্রয়াদেশ দেয়ার চেষ্টা করতে পারে বলে সতর্ক করছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
এ অবস্থায় উদ্যোক্তারা যেন কম দামে ক্রয়াদেশ না নেয়, আবার ক্রয়াদেশও হাতছাড়া না হয় তা নিশ্চিতে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন রফতানিকারকরা।
প্লামি ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল হক সময় সংবাদকে বলেন, ‘সরকারেরও একটা পলিসি নেয়া দরকার যে যদি শেষ পর্যন্ত রফতানিকারকরা এই দরকষাকষির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হনই, সেক্ষেত্রে সরকার কীভাবে তাদেরকে এসময় একটা সাপোর্ট দিতে পারবে।’
এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন,
এখন এটা ফল কোন দিকে যাবে, সেটা কিছু সময় না যাওয়া পর্যন্ত বুঝা যাবে না। সুবিধা নেয়ারও সুযোগ আছে যদি আমরা ভালোভাবে দরকষাকষি করতে পারি।
স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও নানা শর্তে বঞ্চিত করছে মার্কিন প্রশাসন। আবার উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত স্বীকৃতির পর মিলবে না অগ্রাধিকারমূলক কোনো বাণিজ্য সুবিধা। এ অবস্থায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক চুক্তি করার দিকে মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
আমরা কিন্তু ১৫ শতাংশ দিয়েই মার্কিন বাজারে যাচ্ছিলাম। সেখানে অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশের ওপর যেটা চাপানো হয়েছে, সেটা খুবই অন্যায্য হয়েছে। এখন আমাদের হয়ত দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করার একটা সুযোগ আছে।
বাংলাদেশ থেকে মার্কিন বাজারে পোশাক আমদানিতে নতুন করে ট্রাম্পের আরোপ করা ৩৭ শতাংশসহ মোট ৫২ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।