মিশরে সাড়া জাগানো সংগঠন ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’কে নিষিদ্ধ করল ইসরাইলের প্রতিবেশী দেশ জর্ডান।দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিন আব্দেল্লাহ হিলাল আল-ফারাহ বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, মুসলিম ব্রাদারহুড সংগঠন এবং তাদের চেতনা প্রচার—দুটিই এখন জর্ডানে বেআইনি।
মাজিন আব্দেল্লাহর ভাষায়, ‘এই সংগঠনের যেকোনো কর্মকাণ্ড, তা যেভাবেই হোক না কেন, এখন থেকে সবই আইন লঙ্ঘনের শামিল’।
তিনি আরও জানান, সংগঠনটির সব কার্যালয় ও স্থাপনা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।
জর্ডানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন-
- মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ বা সম্পৃক্ততা এখন থেকে বেআইনি।
- কেউ তাদের চেতনা বা মতবাদ প্রচার করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
- যে কেউ এই সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধে জড়িত প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পটভূমি ও সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট:
মুসলিম ব্রাদারহুড ১৯২৮ সালে মিশরের কায়রোতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ইসলামপন্থি রাজনৈতিক সংগঠন। সংগঠনটি বরাবরই দাবি করে আসছে যে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক অংশগ্রহণে বিশ্বাসী। তবে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি স্বৈরশাসিত সরকার তাদেরকে হুমকি হিসেবে দেখে।
মিশরের প্রতিবেশী জর্ডানেও সংগঠনটি গত কয়েক বছর ধরে গোপনে ও নীরবে কাজ করে আসছিল। দেশটিতে তাদের অবস্থান গোপন থাকলেও গাজা যুদ্ধ নিয়ে তারা ইসরাইলের সমালোচনা করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি আরব সংহতির আহ্বান জানিয়েছে।
তারই জেরে, জর্ডান সরকার জানায়, গত ১৫ এপ্রিল তারা মুসলিম ব্রাদারহুডের ১৬ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে রকেট ও ড্রোন ব্যবহার করে দেশের অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
সরকারের দাবি, তারা একটি রকেট হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে সরকার ২০২১ সাল থেকে তাদের এ চক্রান্তের ওপর নজর রাখছিল।
এদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে মুসলিম ব্রাদারহুড জানায়, ‘জর্ডানে আমাদের কার্যক্রম বরাবরই আইনি কাঠামোর মধ্যেই পরিচালিত হয়ে আসছে’।
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিন আব্দেল্লাহর দাবি—
- সংগঠনটি তাদের অনেক গোপন নথি ধ্বংস করে কার্যক্রম আড়াল করতে চেয়েছিল;
- তারা বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরক ও অস্ত্র পরিবহণ করে আবাসিক এলাকায় সংরক্ষণ করছিল;
- রাজধানী আম্মানের আশপাশে রকেট তৈরি ও গোপন প্রশিক্ষণ শিবির পরিচালনা করা হচ্ছিল।
সূত্র: মিডল ইস্ট আই