সম্প্রতি এক ব্যতিক্রমধর্মী সফরের সুযোগ হয় গোপালগঞ্জ জেলার বলাকৈড় গ্রামে অবস্থিত সু-প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া আবুবকর সিদ্দিক (রা.)-এর প্রাঙ্গণে। ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করি টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসে। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে পৌঁছি গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনে। সেখানে আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় রিসিভ করেন বলাকৈড়ের সম্মানিত আলেম মাওলানা সাইফুল ইসলাম ও জামিয়ার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা রায়হান শরীফ। দীর্ঘ যাত্রার পর ক্লান্ত শরীরে প্রাণ জুড়ানো এক অভিজ্ঞতা ছিল বেদ গ্রামে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টে আয়োজিত রাতের ডিনার।
পরদিন সকালটি ছিল আরও মনোরম। জামিয়ার স্বনামধন্য মুহতামিম মুফতী আইয়ুব সাহেবের বাসায় আমন্ত্রণে তার সম্মানিতা স্ত্রী কর্তৃক পরিবেশিত বাহারী আইটেমে সমৃদ্ধ নাস্তা ছিল এক অপূর্ব ভোজনানুষ্ঠান। স্বাদে-স্নিগ্ধতায় ভরা সে সকাল যেন স্মৃতিপটে জ্বলজ্বল করছে।
মাদরাসা প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর চোখে পড়ে এক বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সুবিশাল ভবন। গ্রীষ্মের আলোয় ঝলমল করা গ্রামীণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আর দিগন্তজোড়া নির্মল পরিবেশে অবস্থিত এই জামিয়া ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় ধর্মীয় শিক্ষায় এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এখানকার ছাত্ররা কুরআন, হাদীস, আরবী ভাষা ও বিভিন্ন ইসলামী শাস্ত্রে পারদর্শিতায় প্রশংসিত হচ্ছে। মাদরাসার মুহতামিম মুফতী আইয়ুব সাহেব শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, গোটা এলাকায় তাঁর স্নেহ, আন্তরিকতা ও নেতৃত্বগুণে জনমনে আলাদা অবস্থান তৈরি করেছেন।
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জের এক ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল পদ্মবিল বিধৌত এলাকা-তে অবস্থিত এই মাদরাসা নানাবিধ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমার এই সফর ছিল মুফতী আইয়ুব সাহেবের আমন্ত্রণে। জামিয়ার সকল শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের আন্তরিকতা, আতিথেয়তা ও ভালোবাসা মন ছুঁয়ে যায়। প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করেছি তাদের আন্তরিক সম্মান ও ভালোবাসা। এমন সফর সত্যিই হৃদয়ে গেঁথে থাকে দীর্ঘকাল।
এই সফরের মাধ্যমে আমি কেবল একটি মাদরাসা পরিদর্শন করিনি, বরং একটি সুসংগঠিত, স্বতঃস্ফূর্ত ও দীপ্তিময় দ্বীনি আন্দোলনের অংশ হয়েছি—যা আলোর মত ছড়িয়ে পড়ছে গ্রামীণ জনপদে।
আবারো এই জামিয়ায় আসবো এবং বারবার আসবো এ আশাবাদ রেখে সফরের ইতি টানলাম। শুভকামনা মুহতামিম সাহেব সহ সকলের জন্য।
লেখক: প্রিন্সিপাল, প্রাবন্ধিক, সংগঠক ও সু-বক্তা।