Home ইসলামবিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে রাসুল (সা.) যে দোয়া করতেন

বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে রাসুল (সা.) যে দোয়া করতেন

by MD JUNAYED SHEIKH

জীবনের প্রতি মুহূর্তে ভালো কাজের সামর্থ্য ও অন্যায় কাজ পরিহার করা মুমিনের কর্তব্য। বিশেষত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা চেয়ে দোয়া করা উচিত। একটি দীর্ঘ হাদিসে রাসুল (সা.) আল্লাহর দর্শন লাভের বর্ণনা দিয়েছেন এবং একটি দোয়ার কথা উল্লেখ করে সবাইতে তা পড়তে বলেছেন। দোয়াটি হলো-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ، أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা ফি’লাল খাইরাতি, ওয়া তারকাল মুনকারাতি, ওয়া হুব্বাল মাসাকিনি, ওয়া আন-তাগফিরালি, ওয়া তারহামানি, ওয়া ইজা আরাদতা ফিতনাতা কাউমিন ফাতাওয়াফফানি গাইরা মাফতুনিন।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের, মন্দ কাজগুলো বর্জনের, দরিদ্রদের ভালোবাসার তাওফিক চাই। আপনি আমায় ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন। আপনি যখন কোনো গোত্রকে বিপদে ফেলার ইচ্ছা করেন তখন আপনি আমাকে বিপদমুক্ত রেখে আপনার কাছে তুলে নিন।

হাদিস : 

– احتُبِسَ عنا رسولُ اللَّهِ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ ذاتَ غداةٍ في صلاةِ الصُّبحِ حتَّى كِدنا نتراءى قرنَ الشَّمسِ ، فخرجَ رسولُ اللَّهِ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ سريعًا فثوِّبَ بالصَّلاةِ وصلَّى وتجوَّزَ في صلاتِهِ ، فلمَّا سلَّمَ. قالَ : كما أنتُمْ علَى مصافِّكم . ثمَّ أقبلَ إلَينا. فقالَ : إنِّي سأحدِّثُكُم ما حبسَني عنكمُ الغداةَ إنِّي قمتُ منَ اللَّيلِ فصلَّيتُ ما قُدِّرَ لي فنعستُ في صلاتي حتَّى استثقلت ، فإذا أنا بربِّي عزَّ وجلَّ في أحسنِ صورةٍ. فقالَ : يا محمَّدُ فيمَ يختصمُ الملأُ الأعلى ؟ قلتُ : لا أدري ربِّ. قالَ يا محمَّدُ فيمَ يختصمُ الملأُ الأعلى ؟ قلتُ : لا أدري ربِّ فرأيتُهُ وضعَ كفَّهُ بينَ كتفيَّ حتَّى وجدتُ بَردَ أناملِهِ في صدري وتجلَّى لي كلُّ شيءٍ وعرَفتُ ، فقالَ : يا محمَّدُ فيمَ يختصمُ الملأُ الأعلى ؟ قلتُ : في الكفَّاراتِ والدَّرجاتِ. قالَ : وما الكفَّاراتُ ؟ قُلتُ : نقلُ الأقدامِ إلى الجمُعاتِ والجلوسُ في المساجدِ بعدَ الصَّلواتِ وإسباغُ الوضوءِ علَى الكَريهاتِ. فقالَ : وما الدَّرجاتُ ؟ قلتُ : إطعامُ الطَّعامِ ولينُ الكلامِ والصَّلاةُ والنَّاسُ نيامٌ. قالَ سَلْ. قلتُ : اللَّهمَّ إنِّي أسالُك فِعلَ الخيراتِ وتركَ المنكراتِ وحبَّ المساكينِ وأن تغفرَ لي وترحَمَني وإذا أردتَ فتنةً في قومٍ فتوفَّني غيرَ مفتونٍ وأسالك حبَّكَ وحبَّ من يحبُّكَ وحبَّ عملٍ يقرِّبُني إلى حُبِّكَ . وقالَ رسولُ اللَّهِ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ : إنَّها حقٌّ فادرُسوها وتعلَّموها

অর্থ : মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) বর্ণনা করেছেন, একবার রাসুল (সা.) ফজর নামাজে আসতে বিলম্ব করলেন।

আমরা সূর্যের অগ্রভাগ দেখার কাছাকাছি ছিলাম। অতঃপর তিনি দ্রুত বের হলে নামাজের ঘোষণা দেওয়া হয়। তিনি দ্রুত নামাজ পড়ালেন। সালাম ফিরিয়ে তিনি উচ্চৈস্বরে আমাদের বললেন, ‘তোমরা তোমাদের স্থানে থাকো।

’ অতঃপর তিনি আমাদের দিকে ফিরলেন। তিনি বললেন, ‘আমি তোমাদের বলব, কী কারণে আজ আমার আসতে বিলম্ব হয়েছে। আমি রাতে ঘুম থেকে উঠে যতটুকু পারি নামাজ পড়েছি। নামাজে আমার হালকা ঘুম চলে আসে। আমার কষ্ট হচ্ছিল। হঠাৎ দেখি, আমার রব আমার সামনে তাঁর সবচেয়ে সুন্দর আকৃতিতে রয়েছেন।’ তিনি বললেন, ‘হে মুহাম্মদ, ঊর্ধ্বজগতের ফেরেশতারা কী নিয়ে বিতর্ক করছেন?’ আমি বললাম, ‘হে আমার রব, আমি তো জানি না।’ তিনি বললেন, ‘হে মুহাম্মদ, ঊর্ধ্বজগতের ফেরেশতারা কী নিয়ে বিতর্ক করছেন?’ আমি বললাম, ‘হে আমার রব, আমি তো জানি না।’ আমি দেখলাম, তিনি (আল্লাহ) নিজ হাতের তালু আমার ঘাড়ের ওপর রাখলেন। আমি তার আঙুলের শীতলতা আমার বুকে অনুভব করি। ফলে আমার সামনে সবকিছু স্পষ্ট হয় এবং আমি চিনতে পারি। অতঃপর তিনি বললেন, ‘হে মুহাম্মদ, ঊর্ধ্বজগতের ফেরেশতারা কী নিয়ে বিতর্ক করছেন?’ আমি বললাম, ‘কাফফারা বা পাপ মোচনকারী ও দারাজাত বা মর্যাদা বৃদ্ধি সম্পর্কে।’ তিনি বললেন, কাফফারা কী? আমি বললাম, ‘জামাতের জন্য হাঁটা, নামাজের পর মসজিদে বসে থাকা, কষ্টকর হলেও পরিপূর্ণভাবে অজু করা।’ তিনি বলেন, ‘দারাজাত বা মর্যাদা বৃদ্ধি কী? আমি বললাম, ‘আহার করানো, সুন্দর কথা বলা, মানুষের ঘুমানো অবস্থায় নামাজ পড়া।’ অতঃপর তিনি (আল্লাহ) বললেন, ‘তুমি চাও।’ আমি উল্লিখিত দোয়াটি পড়লাম।’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘এই কথাগুলো সত্য। তোমরা তা পাঠ করো এবং তা শিখো।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩২৩৫)

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment