রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সাম্প্রতিক ড্রোন হামলার পর রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘উন্মাদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পুতিনের প্রতি অসন্তোষ জানিয়ে এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমার বরাবরই খুব ভালো সম্পর্ক, কিন্তু তার কিছু একটা হয়েছে। তিনি পুরোপুরি “উন্মাদ” হয়ে গেছেন!’ সেই সঙ্গে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি সংক্রান্ত সতর্কবার্তাও দিয়েছেন তিনি। সূত্র: এএফপি
তিনি আরও বলেন, “আমি তার ওপর খুশি নই। কারণ যখন আমরা যুদ্ধ শেষ করার জন্য সংলাপ শুরু করেছি এবং তা মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে, সে সময় কিয়েভ ও অন্যান্য শহরে ড্রোন হামলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এটা আমার ভালো লাগেনি….দেখা যাক, সামনে কী হয়।”
শনিবার রাত থেকে গতকাল পর্যন্ত ইউক্রেনে রেকর্ডসংখ্যক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া, হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতভর ইউক্রেনে ৩৬০টিরও বেশি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে রুশ বাহিনী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গত সাড়ে তিন বছরে এটি ছিল রুশ বাহিনীর সর্ববৃহৎ ড্রোন হামলা।
রোববার রাতেও ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা। তবে এই হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহজুড়ে রাজধানী মস্কোসহ রাশিয়ার বিভিন্ন শহরের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে অন্তত ৭৬৪টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। সেই হামলার জবাব দিতেই শনিবারের হামলা চালানো হয়েছিল।
নিউজার্সিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে অবশ্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিরও কঠোর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। জেলেনস্কির প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যেসব কথাবার্তা বলছেন, তা তার দেশের কোনো উপকারে আসছে না; বরং তার মুখ থেকে যা বেরোচ্ছে— তা আরও সমস্যার সৃষ্টি করছে। আমি এটা পছন্দ করছি না। তিনি মুখ বন্ধ রাখলেই ভালো করবেন।”
গত সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর মধ্যে একটি। গত ২০২৪ সালের নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানকে তিনি অগ্রাধিকার দেবেন।
২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করেন ট্রাম্প। তারপর থেকে যুদ্ধ থামানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সম্প্রতি তুরস্কে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা সংলাপে বসেছিলেন। সেই সংলাপের পর গত কয়েক দিনে মস্কো ও কিয়েভ ১ হাজার করে যুদ্ধবন্দিকে মুক্তিও দিয়েছে।