Home আন্তর্জাতিকসৌদির সতর্কবার্তাতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে বসেছে ইরান?

সৌদির সতর্কবার্তাতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে বসেছে ইরান?

by MD JUNAYED SHEIKH

পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে এই প্রথম ইরানকে সরাসরি এবং স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়েছে সৌদি আরব। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উদ্দেশে সৌদির বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ বলেছেন, এ ইস্যুতে যদি ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমঝোতায় না যায় তেহরান— তাহলে যে কোনো সময় ইরানে সামরিক অভিযান শুরু করেতে পারে ইসরায়েল।

৮৯ বছর বয়সী বাদশাহ সালমান অবশ্য খামেনির সঙ্গে সরাসরি কথা বলেননি। সৌদির বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং বাদশাহর অন্যতম পুত্র প্রিন্স খালিদ বিন সালমান তেহরান সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে খামেনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাদশাহ সালমানের এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন প্রিন্স খালিদ।

সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, ৩৭ বছর বয়সী প্রিন্স খালিদ এই সফরটি হয়েছিল ১৭ এপ্রিল এবং এটি ছিল ইরানে তার প্রথম সফর। তেহরানে পৌঁছে তিনি আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে খামেনির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাকশি।

প্রিন্স খালিদের সফরের এক সপ্তাহ আগেই এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন যে ইরানের পরমাণু প্রকল্প ইস্যুতে তেহরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে যেতে চান তিনি। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন যে তেহরান যদি পরমাণু বোমা বানানোর প্রকল্প বন্ধ করে, তাহলে দেশটির ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাগুলোও প্রত্যাহার করবে ওয়াশিংটন।

খামেনির সঙ্গে বৈঠকে সৌদির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে যদি পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে তেহরান, তাহলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হবে; আর যদি তা না করে, তাহলে ইসরায়েলকে দিয়ে ইরানে সামরিক অভিযান শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র— যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে চরম অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, খামেনির সঙ্গে প্রিন্স খালিদের বৈঠকটি ছিল গোপন ও রুদ্ধদ্বার। এমন কি সংবাদমাধ্যমগুলেও দীর্ঘদিন বৈঠকের ব্যাপারটি আঁচ করতে পারেনি। ইরান, সৌদি আরব ও আন্তর্জাতিক সংবাদামধ্যমগুলোতে শুধু প্রিন্স খালিদের সফরের সংবাদ বেরিয়েছিল, বৈঠকের কোনো তথ্য সেখানে লি না।

এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানতে ইরান এবং সৌদির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কোনো কর্মকর্তাই মন্তব্য বরতে রাজি হননি।

লেবাননভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক সংস্থা কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টারের কর্মকর্তা মোহামাদ হাজি আলী রয়টার্সকে বলেন, “সৌদি আরব খুব ভালোভাবেই অনুভব করতে পেরেছে যে যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল যদি ইরানে সত্যিই সামরিক অভিযান শুরু করে, তাহলে গোটা মাধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। সেজন্যই এই কূটনৈতিক পন্থা গ্রহণ করেছে রিয়াদ এবং এখন পর্যন্ত আমরা বলতে পারি যে এটি সফল হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, চলতি মে মাসের শুরুর দিকে কাতারের রাজধানী দোহায় মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছে ইরানের সরকারি প্রতিনিধি দল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সংলাপের এযাবৎকালের ফলাফলে তিনি সন্তুষ্ট।

সূত্র : রয়টার্স

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment