তলিয়ে গেছে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ ৩ পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ি ঢল নামছে সাদাপাথর, জাফলং ও বিছানাকান্দি পর্যটন কেন্দ্রের সীমান্ত নদী দিয়ে। ফলে চলমান পরিস্থিতিতে এই তিন পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সিলেটে শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছেন উজানের বৃষ্টিপাত। ভারতের ওপারে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে সিলেটেও হয়েছে দিনভর বৃষ্টি। এতে তলিয়ে গেছে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ ৩ পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ি ঢল নামছে সাদাপাথর, জাফলং ও বিছানাকান্দি পর্যটন কেন্দ্রের সীমান্ত নদী দিয়ে। ফলে চলমান পরিস্থিতিতে এই তিন পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে দিনভর বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কন্ট্রোল রুম খুলেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। অন্যদিকে সিলেটের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১ মিলিমিটার ও সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭ মিলিমিটার এবং দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। এর আগে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় সিলেটে।
এদিকে সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, বিছনাকান্দি ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রের সাদাপাথর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানান, উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের নিচু অংশের অংশবিশেষ প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কিছু কিছু এলাকায় পানি বাড়ছে। এই ঢলের সময় পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ ঝুঁকিপুর্ণ।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার বলেন, উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো কারও আশ্রয় নেয়ার প্রয়োজন পড়েনি। তিনি বলেন, উজানে বৃষ্টি হচ্ছে, সাদাপাথর দিয়ে ঢল নামাটা স্বাভাবিক। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, শুক্রবার ২৪ ঘন্টায় ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারতে বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি ঢল সীমান্তের নদ-নদী দিয়ে সিলেটে আসে। ফলে নদ নদীর পানি বাড়ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে সিলেটে।
অন্যদিকে সিলেটে ভারী বর্ষণের ফলে সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিসিক একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের দায়িত্বে রয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর (মোবাইল: ০১৭১১৯০৬৬৪৭)। এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সার্বিক তদারকির দায়িত্বে আছেন প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান (মোবাইল: ০১৭১৩৩১১৫২৬) এবং প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অবঃ) মোহাম্মদ একলিম আবদীন (মোবাইল: ০১৭৬৯০০৫৮৬)।