পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপির সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। সবশেষ প্রায় ৬ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা নুরকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা কমপ্লেক্স এর ডাক বাংলোতে পৌঁছে দেয়।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গণ অধিকার পরিষদের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করে। এতে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের (ভিপি নুর) ছোটভাই আমিনুল ইসলাম নুরসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।
রাত দেড়টার দিকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ভিপি নূর। তিনি বলেন, রাত পৌনে ১০টা থেকে ১টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত এখনও অবরুদ্ধ। পুলিশ-সেনাবাহিনী এসে এখনও সন্ত্রাসীদের রাস্তা থেকে হঠাতে পারেনি। আমাকে আমার নিজ এলাকায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনী-পুলিশ তাদের কাছে স্যালেন্ডার করেছে, কিভাবে এরা একটি জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার গলাচিপা উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের পরিচিতি সভায় বিএনপিকে নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দেয়ার জেরে ভিপি নূরের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নিজ ইউনিয়নে চর বিশ্বাসে গণ অধিকার পরিষদ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধের জেরে চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপি ও গণ অধিকারের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এর জেরে সন্ধ্যায় গলাচিপা উপজেলার বকুলাবাড়ির একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষে উপজেলা সদরে ফেরার পথে সড়কে গাছের গুড়ি ও লাঠিসোটা নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা নূরের পথ আটকে দিলে তিনি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা কমপ্লেক্স এর ডাক বাংলোতে পৌঁছে দেয়।
এর আগে এক বার্তায় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ দাবি করেন, নুরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা।
তার দাবি, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর থেকে গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা রাস্তায় গাছ ফেলে গুলতি, রড, রামদা নিয়ে আমাদের পথরোধ করেছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় কয়েকজনকে মারধর করে দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেছে। রাত ১১টার পরও পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
এদিকে গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেন, ‘চর বিশ্বাসে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সভা করছিলেন। এ সময় ভিপি নুরের ছোটভাই আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে তারা সেখানে হামলা চালায় এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের মারধর করেন। এতে তাদের ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে গলাচিপা থানার ওসি মো. আসাদুর রহমান জানান, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৫-৭ আহত হয়েছে খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার পরিস্থিতি এখন শান্ত।