Home শিল্প সাহিত্যসিরাতসংখ্যা। খুলুকিন আযীম

সিরাতসংখ্যা। খুলুকিন আযীম

by .
সিরাতসংখ্যা। খুলুকিন আযীম

প্রিয় নবীজী (সা) এর চরিত্র মাধুর্য এতই মহিমাময় মহিমান্বিত যা কখনোই লিখে বা মুখে ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। তিনি ছিলেন সর্বদিক থেকে সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী।যার ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারীমে ঘোষণা করেছেন “নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রে উপর অধিষ্ঠিত”। কোন ব্যক্তির চরিত্র সম্পর্কে সবথেকে যিনি ভালো বলতে পারেন তিনি হচ্ছেন তার স্ত্রী। আর নবীজী (সা) এর চরিত্র সম্পর্কে আম্মাজান আয়েশা (রা) এর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন “আল- কোরআনই হচ্ছে তার (সা) চরিত্র”। অর্থাৎ কোরআন যেমন পূত পবিত্র তার (সা) চরিত্র ও তেমন পূত পবিত্র।
আম্মাজান খাদীজা (রা) নবীজী (সা) উদ্দেশ্য করে বলেন ” আপনি তো আত্মীয়–স্বজনের সাথে সদাচরণ করেন, অসহায় দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহায়তা প্রদান করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্থকে সাহায্য করেন।

মানবীয় সকল গুণাবলী তার (সা) মাঝে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কখনো পাপের অণু থেকে অণু পরিমাণ ছিটে ফোঁটা ও তার চরিত্রের উপর নূন্যতম দাগ লাগাতে পারেনি। অবশ্য এ গুণে সকল পয়গম্বরই (আ) গুণান্বিত‌ ছিলেন, কেননা আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে মাসুম হিসেবে প্রেরণ করেছেন।
প্রিয় নবীজীর এই উত্তম চরিত্রের কারনেই কাফের মুশরিকেরা তাকে(সা) আল-আমিন নামে ভূষিত করেছিল।
শত বিরোধীতা করা সত্ত্বেও তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ আমানাতদার মনে করতো। নবীজী (সা) হিজরতের সময় হযরত আলী (রা) কে মক্কায় রেখে যাওয়ার মুল কারণ ছিলো তাদের এই আমানত গুলো সঠিক ভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। একবার চিন্তা করে দেখুন সবাই যখন তাকে হত্যা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তার মাথার মুল্য নির্ধারণ করেছে তখন ও তিনি ফিকির করেছেন তাদের আমানত বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।
তিনি বড়দের সর্বদা সম্মান করতেন মদীনায় হিজরতের পর একবার তার দুধ মাতা হালিমাতুস সাদিয়া (রা) তার কাছে আসলেন নবীজী (সা) তাকে দেখা মাত্রই উম্মী উম্মী আমার মা আমার মা বলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পরলেন এবং তার বসার জন্য নিজের পরনের চাদর পর্যন্ত বিছিয়ে দিলেন।
তিনি যেমন বড়দের সম্মান করতেন ঠিক তেমনি ইয়াতিম ও ছোট শিশুদের ও পরম স্নেহ করতেন ,ভালোবাসতেন মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করতেন,আতর লাগিয়ে দিতেন।
এর বড় প্রমাণ হচ্ছে হযরত যায়েদ বিন হারেসা (রা)নবীজী (সা) এর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে নিজ পিতা মাতা সব কিছু পরিত্যাগ করে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত নবীজীর খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।আর নবীজী (সা)তাকে গোলাম থেকে আযাদ করে নিজের সন্তান হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
অনুরূপভাবে হযরত আনাস (রা) এর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে নবীজী (সা) এর সংস্পর্শে ।নবীজী সম্পর্কে তিনি বলেন আমি একাধারে দশ বছর নবী করীম সা) এর খেদমত করেছি কিন্তু তিনি কোন দিন ‘উফ’ শব্দটি পর্যন্ত আমাকে বলেননি। এমনকি এ কাজটি কেন করেছ ?এবং তা কেন করনি?এমন কথাও কোন দিন বলেননি।
নবীজী (সা) উম্মাহকে ও এ বিষয়ে কঠিন সতর্কবাণী প্রেরণ করেছেন। তিনি (সা) বলেন “যে ব্যক্তি বড়দের সম্মান করে না ও ছোটদের স্নেহ করে না সে আমার উম্মতের মধ্যেই পড়ে না”।
মোট কথা প্রিয় নবীজী (সা) সর্বাদিক থেকে ছিলেন সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে নবীজী (সা)এর অনুপম আদর্শে আদর্শীত হয়ে জীবন পরিচালনা করার তাওফীক দান করুন।


লেখকঃ শিক্ষক ,

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment