শুক্রবার গাজা সিটির বহুতল ভবন ‘মুশতাহা টাওয়ার’ গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলের সেনারা। ছবি: এএফপি
গাজা সিটির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার একটি বহুতল ভবন ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও ভবনে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে তেল আবিব।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গাজায় ‘নরকের দরজা’ খুলে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে অভিযান জোরদার করেছে।
শুক্রবার গাজা জুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা সিটিতে হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত সাত শিশু।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দাবি করেছে তারা গাজা সিটির ৪০ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আবাসিক ভবন ও বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় শিবিরে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল (ইউনিসেফ) বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘অকল্পনীয়’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ শিশু। এ হিসেবে ২০২৩ সালে হামলা শুরুর পর প্রতিদিন গড়ে ২৮ শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় অন্তত ৬৪ হাজার ২৩১ জন নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দেড় লাখ।
আল জাজিরার এক বিশ্লেষণে দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের গণমাধ্যম অধ্যয়নের অধ্যাপক মোহাম্মদ এলমাসরি বলেছেন, গাজার বহুতল ভবনে হামলার মাধ্যমে সম্ভবত যুদ্ধের নতুন পর্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে।
পশ্চিম গাজা সিটির বাসিন্দা আহমেদ আবু উতফা (৪৫) বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বহুতল ও আবাসিক ভবনে ইসরায়েল বোমা বর্ষণ শুরু করেছে। বাসিন্দারা সবাই আতঙ্কিত। কেউ জানে না কোথায় যাবে। আহমেদ বলেন, ‘আমার সন্তানরা আতঙ্কে আছে। আমিও তাই। কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। আমরা এখন দ্রুত মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি।’
শুক্রবার গাজার বহুতল ভবন মুশতাহা টাওয়ার গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলের সেনারা। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক কিশোর আল জাজিরাকে বলে, সে খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। তখনই পাশের মুশতাহা টাওয়ারে হামলা করা হয়। ভবনটি এখন ধুলায় মিশে গেছে।
গাজার দেইর আল বালাহ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদরে জানিয়েছেন, ১২ তলা ভবনটি ইসরায়েলের সেনারা দুই দফায় হামলা চালিয়ে ধসিয়ে দেয়। প্রথম দফার হামলাটি ছিল সতর্কতামূলক। দ্বিতীয় দফায় এফ-১৬ বিমান দিয়ে হামলা চালায়। এতে বেশকয়েকজন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হতাহতের চাপে তারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ভবনটির আশপাশে থাকা তাবুগুলোও আর থাকার উপযোগী নেই।