নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি। ছবি: এএফপি
নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রোববার থেকে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন সুশীলা কারকি। সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে ‘ডিসকর্ড’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মে ভোটাভুটির মাধ্যমে বেছে নেয় বিক্ষোভকারীরা।
গত সপ্তাহে ছাত্র-জনতার তীব্র বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন কে পি শর্মা অলি। এরপর থেকে নেপালে প্রশাসনিক শূন্যতা তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ ওরফে বালেনকে প্রধানমন্ত্রী করার ব্যাপারে প্রচার চালায় তরুণরা। শেষ পর্যন্ত বেশ কয়েক দফায় বৈঠকের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয় সুশীলা কারকিকে।
ভারতের এনডিটিভির বরাত দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট। সেখানে বলা হয়েছে ডিসকর্ড নামের বার্তা আদান-প্রদানের প্ল্যাটফর্মে কীভাবে সুশীলা কারকিকে বেছে নেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে ডিসকর্ডের ১ লাখ ৪৫ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপে বিতর্ক হয়। এই গ্রুপের সদস্যরা বিক্ষোভে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। গ্রুপে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীদের নিয়ে একাধিক ভোটাভুটি হয়। এতে সুশীলা কারকির পক্ষে সমর্থন দেন বেশিরভাগ সদস্য।
এই গ্রুপের একজন সদস্য কনটেন্ট ক্রিয়েটর সিধ ঘিমির (২৩)। তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের জন্য ডিসকর্ডই যেন পার্লামেন্টে পরিণত হয়েছিল। ভোটাভুটির আয়োজন করেছিল হামি নেপাল নামের একটি নাগরিক সংগঠন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের কারণে সুশীলা কারকি নেপালে বেশ সমাদৃত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল তৎকালীন তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী জয় প্রকাশ প্রসাদ গুপ্তাকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা।
সুশীলা কারকি ও তাঁর স্বামী দুর্গা প্রসাদ সুবেদি উভয়ই নব্বইয়ের দশকের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ওই আন্দোলনের মাধ্যমে নেপালে রাজতন্ত্র ও পঞ্চায়েত ব্যবস্থার অবসান হয়। দুর্গা প্রসাদ তখন নেপালি কংগ্রেসের তরুণ নেতা ছিলেন। রাজতন্ত্র বিরোধী আন্দোলনে তহবিল গঠনের জন্য তিনি রয়াল নেপাল এয়ারলাইনস এর একটি উড়োজাহাজ ছিনতাই করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে। এই অভিযোগে তাঁকে কয়েক বছর জেল খাটতে হয়।