Home ইসলামআফগানিস্তানের দিল্লি জয়

আফগানিস্তানের দিল্লি জয়

by .

আমরা সেই প্রজন্ম যারা উপন্যাস পড়ে জেনেছি ইতিহাসের এক সময় সুলতান মাহমুদ গজনবী নামে এক মহাবীর ছিলেন যিনি সোমনাথ মন্দির তো বটেই সতেরো বার ভারত আক্রমণ করে হিন্দুদের মিথ্যা প্রভুর মসনদ চুরমার করে দিয়েছিলেনিআল্লাহর জমিনে তাঁর একত্ববাদের ঝান্ডা উড়িয়েছিলেন। মহাবীর
আহমাদ শাহ আবদালি মারাঠাদের কচুকাটা করেছিলেন।
আমার কাছে এগুলো ছিল কেবলই ধূসর অতীত কিন্তু কাল কি দেখলাম?
এই বিংশ শতাব্দীতে এগুলো দেখব কখনো কল্পনা করেছিলাম? নিশ্চয়ই স্বপ্নে ও নয়। কিন্তু না, সব জল্পনা কল্পনা দূরে ঠেলে কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী মোদির দেশে আফগানের ইমারতে ইসলামিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাগড়ি, দাড়ি, সফেদ শুভ্র বসনে হযরত ওমরের উত্তরসূরী আমির খান মুত্তাকীকে সুস্বাগতম জানিয়েছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী গেরুয়া শিবিরের মহান ধারক বাহক মিস্টার নরেন্দ্র মোদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর!
পাঠক! হ্যাঁ,আপনি ঠিকই পড়েছেন কালকের এই কড়কড়া তাজা নিউজে বিশ্ব নড়ে গেছে।
এরই মাঝে গোটা ভারতের চক্ষুশূল দারুল উলূম দেওবন্দে মুত্তাকী বন্দনা আর উষ্ণ অভ্যর্থনা হয়েছে কায়দামতো।
আরএসএস বিজেপি সরকার আর গোড়া হিন্দুরা বিষয়টি কিভাবে মেনে নিল মাথায় ধরে না।
আমি এর গোটা কৃতিত্ব মাথামোটা পাকিস্তান আর সোনালি কেশের পাগলাটে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দিতে চাই। ওরা চালাকি করে
ভারতকে ফিল্ডিংয়ে পাঠালো ঠিক তবে আফগানিস্তান ও ছক্কা হাঁকাতে ভুল করেনি।
যাক,এবারে মূল আলাপে আসা যাক।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মেরুকরণ কাকে ঘিরে?
নিশ্চয়ই ভারতকে ঘিরে।
হ্যাঁ একসময় ছিল কিন্তু এখন আর না। বীরের দেশ আফগানিস্তান আমেরিকা রাশিয়াকে নাকানিচুবানি খাইয়ে মূল শক্তি নিজেদের করে নিয়েছে। তারা দেখাল মুসলিম বিশ্বে রুকুনুদ্দিন বাইবার্স চলে এসেছে এখন তাতারদের গর্তে ঢোকার সময় হয়ে এসেছে।
কালকে এস জয়শংকর দাদা যখন এ্যম্বুলেন্সের চাবি মুত্তাকী সাহেবের কাছে হস্তান্তর করছে তখন শ্রী এস জয়শংকর দার চেহারা ছিল দেখার মতো। আকাশের সবটুকু মেঘ তার শুকনো মুখ ছেয়ে ফেলেছিল। পরমাণু শক্তিধর,প্রতিরক্ষায় 4র্থ নম্বরে অবস্থান করেও এ হাল কিভাবে হল? সহজ উত্তর,মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত ও মুজাহিদদের জিহাদি জজবা। ভারত ভালো করেই জানে আফগানিস্তানের কাছে কি যেন শক্তি আছে যা পরমাণু থেকেও শক্তিশালী। হ্যাঁ,তাদের অনুমান শতভাগ সঠিক। সেই অপরাজেয় শক্তির নাম জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ,যার সামনে বিশ্বের পরাশক্তিগুলো ধ্বসে যায়।

বহুদিন আগে আমার বড় হুজুর বলেছিলেন,যারা গণতন্ত্র চর্চা করে তাদের রাজনীতিতে শেষ বলতে নাকি শব্দ নেই।
যেই দেশ গরু নিয়ে রাজনীতি পবিত্র জ্ঞান করে,গরুর গোশত বহনের সন্দেহের জেরে মুসলমান পিটিয়ে মেরে ফেলে অথচ সেই দেশ সারাবিশ্বে গরু রপ্তানিতে নম্বর ওয়ান হয়।
মুসলমানদের যারা স্বপ্নেও শত্রু মনে করে তাদেরই জাত একজনের হাতে এ্যাম্বুলেন্সের চাবি উঠিয়ে দেয়াকে বিরাট কৃতিত্ব মনে করছে।
এই কৃতিত্ব হিন্দুদের নয় বরং মুসলমানদের সাহসিকতার, আল্লাহভীরুতার।
যখন মুসলমান আল্লাহকে ভয় করবে,তাঁর প্রদত্ত জীবন-বিধান মনেপ্রাণে মেনে নিবে আল্লাহ পাক এর পুরষ্কার দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে দিবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকীর সেই ছবি এর জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ।
উগ্রবাদ, সহিংসতা ও উস্কানির দিনশেষ,সময় এখন শান্তিকামী, জিহাদি মানসিকতার বীর পুরুষদের।
তালেবান এখন গালি নয় বরং শান্তি ও সাহসিকতার নাম।
জিহাদ সন্ত্রাস নয় বরং শান্তির নামে নিরপরাধ নিরস্ত্র মানুষদের উপর নির্বিচারে গুলি করা,বোম মারা ও পিটিয়ে মেরে ফেলার নাম সন্ত্রাস।
পৃথিবীর চোখ খুলে গেছে, হায়েনা হিংস্রদের রক্তখেকো চেহারা থেকে মুখোশ খসে পড়েছে বিশ্ববাসীর সামনে।
সুতরাং মিডিয়ার বানানো বানোয়াট কেচ্ছা আর সহজে গেলানো যাবে না।
সাধু সাবধান, আফগানিস্তানের হাতে দিল্লির জয় হয়ে গেছে।

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment