মুহাম্মাদ আইয়ুব
আমরা সেই প্রজন্ম যারা উপন্যাস পড়ে জেনেছি ইতিহাসের এক সময় আফগানি¯ত্মানে সুলতান মাহমুদ গজনবী নামে এক মহাবীর ছিলেন যিনি সোমনাথ মন্দির তো বটেই সতেরো বার ভারত আক্রমণ করে হিন্দুদের মিথ্যা প্রভুর মসনদ চুরমার করে দিয়েছিলেন,আলস্নাহর জমিনে তাঁর একত্ববাদের ঝান্ডা উড়িয়েছিলেন। মহাবীর আহমাদ শাহ আবদালি মারাঠাদের কচুকাটা করেছিলেন।
আমার কাছে এগুলো ছিল কেবলই ধূসর অতীত কিন্তু কাল কি দেখলাম? এই বিংশ শতাব্দীতে এগুলো দেখব কখনো কল্পনা করেছিলাম? নিশ্চয়ই স্বপ্নেও না। কিন্তু না, সব জল্পনা কল্পনা দূরে ঠেলে কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী মোদির দেশে আফগানের ইমারতে ইসলামিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাগড়ি, দাড়ি, সফেদ শুভ্র বসনে হযরত ওমরের উত্তরসূরী আমির খান মুত্তাকীকে সুস্বাগতম জানিয়েছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী গেরম্নয়া শিবিরের মহান ধারক বাহক মিস্টার নরেন্দ্র মোদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর!
পাঠক! হ্যাঁ,আপনি ঠিকই পড়েছেন। কালকের এই কড়কড়া তাজা নিউজ বিশ্ব নড়ে গেছে।
এরই মাঝে গোটা ভারতের চক্ষুশূল দারম্নল উলূম দেওবন্দে মুত্তাকী বন্দনা আর উষ্ণ অভ্যর্থনা হয়েছে কায়দামতো।আরএসএস বিজেপি সরকার আর গোড়া হিন্দুরা বিষয়টি কিভাবে মেনে নিল মাথায় ধরে না।আমি গোটা কৃতিত্ব মাথামোটা পাকি¯ত্মাান আর সোনালি কেশের পাগলাটে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দিতে চাই। ওরা চালাকি করে ভারতকে ফিল্ডিংয়ে পাঠালে ঠিকা কিন্তু ছক্কা হাঁকাতে আফগানি¯ত্মান মোটেও কালড়্গপেন করেনি। যাক এবারে মূল আলাপে আসা যাক।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মেরম্নকরণ কাকে ঘিরে?নিশ্চয়ই ভারতকে ঘিরে।হ্যাঁ একসময় ছিল কিন্তু এখন আর না। বীরের দেশ আফগানি¯ত্মান আমেরিকা রাশিয়ার মতো পরাশক্তিগুলোকে নাকানিচুবানি খাইয়ে মূল শক্তি নিজেদের করে নিয়েছে। মুসলিম বিশ্বে রম্নকুনুদ্দিন বাইবার্সদের যুগ আবার ফিরে এসেছে। ফিলি¯িত্মন আর কাশ্মিরের রক্ত কোনকালেই বৃথা যেতে পারে না।
কালকে এস জয়শংকর দাদা যখন এ্যম্বুলেন্সের চাবি মুত্তাকী সাহেবের কাছে হ¯ত্মাšত্মর করছিল তখন ভদ্রলোকের চেহারা দেখার মতো ছিল না। আকাশের সবটুকু মেঘ তার শুকনো মুখ ছেয়ে ফেলেছিল। কিন্তু কেন? পরমাণু শক্তিধর,প্রতিরড়্গায় বিশ্বের ৪র্থ নম্বরে অবস্থান করেও এ হাল কিভাবে হল? সহজ ইত্তর,মহান আলস্নাহর সিদ্ধাšত্ম আর মুজাহিদদের জিহাদী জজবা। ভারত জানে আফগানি¯ত্মানের কাছে কি যেন শক্তি আছে যা পরমাণু শক্তি থেকেও বেশী শক্তিশালী। হ্যাঁ,তাদের অনুমান সত্য আর সে শক্তির নাম জিহাদ। যার সামনে বিশ্বের পরাশক্তিগুলো ধূলিস্মাৎ হয়ে যায়।
যে জন্য হিন্দুত্ববাদীদের অখন্ড ভারতের স্বপ্ন আর ডামাডোল যে মিছেমিছি তা শ্রী এস জয়শংকরের চেহারা লুকাতে পারেননি।
বহুদিন আগে আমার বড় হুজুর বলেছিলেন,যারা গণতন্ত্র চর্চা করে তাদের রাজনীতিতে শেষ বলতে নাকি শব্দ নেই। যেই দেশ গরম্ন নিয়ে রাজনীতি পবিত্র জ্ঞান করে,গরম্নর গোশত বহনের সন্দেহের জেরে মুসলমান পিটিয়ে মেরে ফেলে সেই দেশ সারাবিশ্বে গরম্নর গোশত রপ্তানিতে নম্বর ওয়ান হয়।মুসলমানদের যারা স্বপ্নেও শত্রু মনে করে তাদেরই জাত একজনের হাতে এ্যাম্বুলেন্সের চাবি উঠিয়ে দেয়াকে বিরাট কৃতিত্ব মনে করছে।এই কৃতিত্ব হিন্দুদের নয় বরং মুসলমানদের সাহসিকতার, আল্লাহভীরম্নতার। যখন মুসলমান আল্লাহকে ভয় করবে,তাঁর প্রদত্ত জীবন-বিধান মনেপ্রাণে মেনে নিবে আল্লাহ পাক এর পুরষ্কার দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে দিবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকীর সেই ছবি এর জ্বলজ্যাšত্ম প্রমাণ। উগ্রবাদ, সহিংসতা ও উস্কানির দিনশেষ,সময় এখন শাšিত্মকামী, জিহাদি মানসিকতার বীর পুরম্নষদের।তালেবান এখন গালি নয় বরং শাšিত্ম ও সাহসিকতার নাম।
জিহাদ সন্ত্রাস নয় বরং শাšিত্মর নামে নিরপরাধ নিরস্ত্র মানুষদের উপর নির্বিচারে গুলি করা,বোম মারা ও পিটিয়ে মেরে ফেলার নাম সন্ত্রাস। পৃথিবীর চোখ খুলে গেছে, হায়েনা হিংস্রদের রক্তখেকো চেহারা থেকে মুখোশ খসে পড়েছে বিশ্ববাসীর সামনে।সুতরাং মিডিয়ার বানানো বানোয়াট কেচ্ছা আর সহজে গেলানো যাবে না।সাধু সাবধান, আফগানি¯ত্মানের হাতে দিল্লির জয় হয়ে গেছে।
লেখক : সম্পাদক , এমজেএফ নিউজ