Home দেশদুনিয়ায় কিছুটা পাওনা আওয়ামী লীগ পেয়েছে, কিছুটা বাকি আছে: জামায়াত আমির

দুনিয়ায় কিছুটা পাওনা আওয়ামী লীগ পেয়েছে, কিছুটা বাকি আছে: জামায়াত আমির

by MD JUNAYED SHEIKH

বরিশালে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনের আমির শফিকুর রহমান। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বরিশাল নগরের হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে

ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ রাক্ষসে পরিণত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘তাঁরা দাম্ভিক ছিলেন, বড় অহংকারী ছিলেন। মানুষকে, বিভিন্ন দলকে বড় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন। তারা মানুষ বলে কাউকে সম্মান দিতেন না। দুনিয়ায় কিছুটা পাওনা তাঁরা পেয়েছেন, কিছুটা বাকি আছে। যেহেতু তাঁরা গণহত্যাকারী ব্যক্তি এবং দল, সেই কারণে আমরা চাই দল এবং গণহত্যাকারী প্রত্যেক ব্যক্তির বিচার হোক। ন্যায়বিচার হোক। বিদ্যমান আইনে তাদের যথাযথ পাওনাটা সমঝে দেওয়া হোক।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বরিশালে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। নগরের বান্ধ রোডে হেমায়েত উদ্দীন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করে বরিশাল মহানগর জামায়াত। মহানগর জামায়াতের আমির জহির উদ্দিন মু. বাবরের সভাপতিত্বে বেলা দুইটায় সম্মেলন শুরু হয়। এতে বরিশাল ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন এলাকার জামায়াতের নেতা-কর্মীরা যোগ দেন।

বিদেশে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের দেশে আসার আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিদেশে যাঁরা আছেন, তাঁদের বলি, সত্যিই যদি দেশটাকে ভালোবাসেন, আসেন, চলে আসেন। কী হয়েছে অসুবিধা নাই তো! আপনাদের আমলে তো আমরা দফায় দফায় জেলে গিয়েছি। জেলে থেকেছি। আমাদের কেমন রেখেছিলেন, এখন আপনারা আসলে সেটা না হয় দেখার সুযোগ পেলেন। একটু দেখেন এসে।’

আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, ‘এখন কেউ কেউ আমাদের কাছে জানতে চান, আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ওই গণহত্যাকারী দল বাংলাদেশের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না? আমরা বলি, আগে গণহত্যার বিচারটা হোক, ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা আগে তাদের ইনসাফটা পাক, তারপরে তারাই রায় দেবে যে ওনারা এদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখেন কি না।’

আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী সিন্ডিকেট অভিহিত করে জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘রাজনীতির নাম যদি গণহত্যা হয়, তাহলে এমন দল বাংলাদেশের জনগণ বরদাশত করবে না। রাজনীতির নাম যদি জনকল্যাণ হয়, তাহলে জনগণ যাকে পছন্দ করবে, তাকে বরণ করে নেবে। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়; বরঞ্চ গণহত্যাকারী একটা সিন্ডিকেট। আমরা যা বললাম, আওয়ামী লীগ আদালতে গিয়ে তা প্রমাণ করুক যে আমাদের কথা সত্য না মিথ্যা।’

আগাছামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে উল্লেখ করে সম্মেলনে শফিকুর রহমান বলেন, একটি গোষ্ঠী এদেশে শাসনের নামে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে, সংখ্যালঘুতে বিভক্ত করেছে। তাদের পক্ষে যারা ছিল না, তাদের এ জাতির কেউ না বলে মনে করতেন। সাড়ে ১৫ বছর তাঁরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ বিদায় করতে পারেননি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শেষ আন্দোলনটা রাজনৈতিক ছিল না। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা করা হোক।

আধা ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যে জামায়াতের আমির আগামী নির্বাচন সংখানুপাতিক পদ্ধতিতে করারও আহ্বান জানান। জামায়াত ২ কোটি ৬০ লাখ লোকের সংগঠন উল্লেখ করে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান এ সময় আরও বলেন, জামায়াত ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সাম্য, মানবিক ও ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চায়। দেশে ফ্যাসিবাদের আর কোনো স্থান হবে না। চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদেরও আর এ জাতি গ্রহণ করবে না।

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম, মুয়াযযম হোসাইন, বরিশাল জেলা আমির মোহাম্মদ আবদুল জব্বার প্রমুখ।






শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment