কাল বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক তুরাগ নদের তীরে শুরু হতে চলেছে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। পবিত্র হজের পরে মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তর জমায়েত ঘটে এই ইজতেমায়। প্রথম পর্বের দুই ধাপে দুটি আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে শুরায়ি নেজামের আয়োজনে। দ্বিতীয় পর্ব হবে সাদপন্থীদের আয়োজনে।
তারা একটি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমা শেষ করবেন।
তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ি নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান কালের কণ্ঠকে জানান, এবারের ইজতেমা হযরত ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শুরায়ি নেজামের অধীনে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। প্রথম ধাপ জানুয়ারি ৩১ ও ১, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিতীয় ধাপ ৩, ৪, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে।
পুরো বাংলাদেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে এবং কে কোন ধাপে অংশগ্রহণ করবে তা ইতিমধ্যে জেলা ওয়ালাদেরকে মুরব্বিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ করছেন- গাজীপুর, টঙ্গী, ধামরাই, গাইবান্ধা, মিরপুর, কাকরাইল, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, কাকরাইল, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাংগা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বি-বাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও রাজবাড়ী জেলা। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১টি জেলা অংশগ্রহণ করছে।
দ্বিতীয় ধাপে অংশগ্রহণ করছেন- যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, মোহাম্মদপুর, মুন্সীগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, টাংগাইল, পাবনা, নরসিংদী, সাভার, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, নওগাঁ, বান্দরবন জেলা।
এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ ২২টি জেলা অংশগ্রহণ করবে।
হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, আলহামদুলিল্লাহ, মাঠ এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। আজ বিকেল থেকেই প্রথম ধাপের ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন খিত্তা ও পয়েন্টের জিম্মাদাররা আসা শুরু করবেন এবং আগামীকাল সকাল থেকে দেশি-বিদেশি মেহমান ও সাধারণ মুসল্লিরা আসা শুরু করবেন।
শুরায়ি নেজামের আয়োজনে প্রথম পর্বের দুই ধাপে ইজতেমা করার কারণ হিসেবে হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, তাবলিগের মেহনত একটি দ্বিনের অন্যতম মেহনত। এবং দ্বিনের ধারকবাহক হচ্ছেন হযরত ওলামায়েকেরাম।
ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ভাইয়েরা উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে থেকেই তাবলিগের মেহনত করতে চান। এই সংখ্যাটা এত ব্যাপক যে টঙ্গী মাঠের ১৬০ একর জায়গায় তাদের অবস্থান করাটা খুবই কষ্টদায়ক হয়ে যায়।
গত কয়েক বছর শুরায়ি নেজামের অধীনে যেসব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছে, আপনারা জেনে থাকবেন আমাদের সাথিরা স্থায়ী টয়লেটের ছাদগুলোর ওপরে, আশপাশে ছোট ছোট মাঠের ভেতরে এবং রাস্তায় ধুলাবালির ভেতর আমাদের সাথিরা কষ্ট করে অবস্থান করেছেন। এবার দুই ধাপে ইজতেমা হওয়ার কারণে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওনারাও যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন, ইতিমধ্যে ওনারা নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করেছেন এবং সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছেন। ওনাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিভিল ড্রেসে বিভিন্ন খিত্তায় তারা অবস্থান করবেন।