উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই ঈদের নামাজ পড়ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স
“তাকবিরের শব্দে ঘুম ভাঙার বদলে আমাদের ঘুম ভেঙেছে বিমান হামলা আর বোমার গর্জনে,” বলেন নাহাল; ঘরছাড়া এই নারীর ঈদ কেটেছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে।
দখলদার বাহিনীর ঘেরাটোপে থেকে রমজানের শেষে ঈদুল ফিতরে যতখানি আনন্দ করা যেত, টানা দ্বিতীয় বছর সেটারও স্বাদ পেলেন না যুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজার বাসিন্দারা।
এবারও আনন্দের দিনটিতে তাদের ঘুম ভেঙেছে ইসরায়েলি বোমারু বিমানের শব্দে, জানিয়েছে খালিজ টাইমস।
“ঈদ, যা একসময় ছিল পরিবারের সবার পুনর্মিলন ও ঘোরার দিন, এখন তা পরিণত হয়েছে চিরবিদায় আর শেষকৃত্যের দিনে,” ২৮ বছর বয়সী মা নাহলা আবু মাতার প্যারিসভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে ঈদের দিন নিয়ে তার অনুভূতি এভাবেই ব্যক্ত করেছেন।
আরও লাখ লাখ গাজাবাসীর মতো নাহলাও বাস্তুচ্যুত, উত্তর গাজার নিজের বাড়ি বাদ দিয়ে এবার তাকে ঈদ করতে হচ্ছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে।
“যেসব মসজিদে নামাজ পড়তাম সেগুলো এখন ধ্বংসস্তূপের ঢিবিতে পরিণত হয়েছে, যেসব জায়গায় আমরা একত্রিত হতাম সেগুলো ছেয়ে গেছে জঞ্জাল আর মৃতদেহে,” বলেন এ নারী।
এই হাহাকারের মধ্যেও রোববার ঈদ এসেছে গাজায়, যদিও এদিন ভোরের আগেই খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৫ শিশুসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজায় কাজ করা একাধিক উদ্ধারকারী দল।
“তাকবিরের শব্দে ঘুম ভাঙার বদলে আমাদের ঘুম ভেঙেছে বিমান হামলা আর বোমার গর্জনে,” বলেন নাহাল।
তার মধ্যেই নিয়ম করে ঈদের সকালে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ঈদের নামাজে অনেকে সমবেত হয়েছিলেন।
কেউ কেউ রাস্তায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই তাদের জায়নামাজ বিছান, কেউ কেউ জায়গা পান মসজিদে। ঈদের নামাজ হয়েছে একসময়কার ঝলমলে ওমারি মসজিদেও, বোমার আঘাতে যার দেয়ালগুলো প্রায় মাটিতে মিশে গেছে।
জিজ্ঞাসা ঈদের দিন ভোরের আগে ইসরায়েলের বিমান হামলায় বোন ও ভাগ্নে হারানো মোহাম্মদ আল কাদি’র।
প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসাকর্মীরা জানান, পুরো দিনজুড়েই খান ইউনিস ও গাজার অন্যান্য এলাকায় থেমে থেমে ইসরায়েলি হামলা হয়েছে।
রাফায় বিমান হামলায় দুই শিশুও আহত হয়েছে, বলেছেন চিকিৎসাকর্মীরা।