Home ইসলামমিম্বর থেকে । শয়তান স্থায়ী শত্রু, সবার শত্রু

মিম্বর থেকে । শয়তান স্থায়ী শত্রু, সবার শত্রু

by MD JUNAYED SHEIKH
মিম্বর থেকে । শয়তান স্থায়ী শত্রু, সবার শত্রু



قال الله تعالى : إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا إِنَّمَا يَدْعُو حِزْبَهُ لِيَكُونُوا مِنْ أَصْحَابِ السَّعِيرِ


আল্লাহ তাআলা হলেন আমাদের সবচেয়ে আপন বন্ধু। তিনি আমাদের সব জরম্নরত পূরণ করনেওয়ালা সত্তা। তিনি আমাদের যতো চাহাত ও চাহিদা আছে সব পূরণ করতে পারেন। শুধু করতে পারেন তা নয় বরং তিনি পূরণ করেনও। তিনি আমাদের ভেতর বাহিরের সব কল্যাণের দিকগুলো সবিস্তারে পবিত্র কুরআনে বলে দিয়েছেন। তন্মধ্যে এখন যে আয়াত তিলাওয়াত করা হলো এতে তিনি আমাদেরকে একটি সতর্কবাণী দিয়েছেন।


সেই সতর্কটা হলো হে আমার বান্দারা! শয়তান তোমাদের জন্য দায়েমী শত্রু এবং সবার শত্রু। শয়তান মানুষকে দিনে ধোঁকা দেয়, রাতে ধোঁকা দেয়। যৌবনকালে ধোঁকা দেয়, বৃদ্ধকালে ধোঁকা দেয়। এমনকি মানুষ যখন নামাযে দাঁড়ায় তখনও সে ধোঁকা দেয়। মুমিন যেকোনো নেক আমল করে ঐ নেক আমল করার মাঝে শয়তান তাকে ধোঁকা দেয়। এই জন্য বলছি, শয়তান তোমাদের দায়েমী শত্রু।

দ্বিতীয় কথা বলেছি, শয়তান সবার শত্রু। হাফেজকে ধোঁকা দেয়, আলেমকে ধোঁকা দেয়। ইমামকে ধোঁকা দেয়, মুসলিস্নদেরকে ধোঁকা দেয়। পুরম্নষকে ধোঁকা দেয়, মহিলাকে ধোঁকা দেয়। সবাইকে সে ধোঁকা দেয়। কেউ তার ধোঁকার সীমানার বাইরে নয়। কেউ যদি মনে করে আমি শয়তান থেকে নিরাপদ, তার ধোঁকার সীমানার বাইরে তাহলে এটাই শয়তানের সবচেয়ে বড় ধোঁকা।

আলেম সাহেব মনে করে শয়তান আমার কাছে আসতে পারবে না, ভুল কথা। নামাযী মনে করে শয়তান আমার কাছে আসতে পারবে না, ভুল কথা। তাই আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ
নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্রু। (সূরা ফাতির, আয়াত : ৬)


‘শয়তান তোমাদের শত্রু কথাটা আল্লাহ তাআলা বলেছেন। আল্লাহ তাআলা নিজে বলেছেন যে, শয়তান তোমাদের শত্রু । দ্বিতীয় খেয়াল করার বিষয় হলো, আল্লাহ তাআলা বলেন, فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا ।
শয়তানকে শত্রু হিসাবেই মনে করো। বন্ধু মনে করিও না। সাঁপ মানুষকে দংশন করে, কামড় দেয়। সে সাময়িক কামড় না দিলেও সুযোগমতো কামড় দেবেই। সাঁপকে কখনো কাছে রেখো না।

যেকোনো সময় সে তোমাকে কামড় দিতে পারে, যতই তুমি তাকে খিলাও, পিলাও, যা কিছু করো না কেনো? সাঁপ যেকোনো সময় তোমাকে কামড় দিতে পারে তদ্রম্নপ শয়তানও তোমাকে যেকোনো সময় ধোঁকা দিতে পারে।


ভাই ও দোস্ত !

আমার জানামতে একটি কথা বলছি এবং এটাই বা স্তব কথা- এমন কোনো মানুষ নেই যার বাড়িতে ঘর আছে কিন্তু দর নেই। কুঁড়ের ঘর হোক তারপরেও তার একটি দরজা থাকে। বিল্ডিং এরও দরজা থাকে। এই দরজা দেয় কেনো? আমার ঘরে যাই আছে চোর এসে যেনো তা নিতে না পারে। সামান হেফাযতের জন্য ঘরের দরজা দেওয়া হয়। তাহলে আমার ঘরের সামান, টাকা-পয়সা, হাড়ি-পাতিল ইত্যাদি চুরি করতে পারবে না। এই জন্য ঘরের দরজা লাগানো হয়।


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যে বললেন, শয়তান তোমাদের শত্রু । সতর্ক হও- শয়তান তোমার ঈমান নষ্ট করতে পারে। শয়তান তোমার আমল নষ্ট করতে পারে। শয়তান তোমাকে চির জাহান্নামী বানাতে পারে।


চোর যদি ঘরের সামান নেয় তাহলে কয় টাকার সামান নিল। ঘর থেকে মোবাইল নিলে একটা মোবাইলের দাম কত আর হতে পারে। ঐ মোবাইল আবার কিনে নেওয়া যাবে। বিশ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেলে আল্লাহ তাআলা ঐ টাকা কোনো না কোনোভাবে তোমাকে দিয়ে দিতে পারেন। এই সামান ও টাকার জন্য ঘরে এত ব্যবস্থাপনা! কোথাও যাওয়ার সময় খেয়াল করে দরজা লাগানো হয়েছে কিনা? তালা লাগানো হয়েছে কিনা? তালা লাগানোর পর আবারও তালাটি টেনে দেখে ভালোভাবে লাগানো হয়েছে কিনা? এই স্বল্প টাকার জিনিসের জন্য বারবার দেখে, টান দেয়, আবার দেখে লাগানো হলো কিনা?


আমার ভাই ও দোস্ত!

আপনাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা- টাকার দাম বেশি, না ঈমানের দাম বেশি? অনেক বেশি। আপনাদের শুধু নেত্রকোণা নয়। এই নেত্রকোণায় যত ধান ড়্গতে, টাকা-পয়সা, গহনা-অলঙ্কার আছে, শুধু তা নয়; সারা দুনিয়াতে যত সম্পদ আছে সব যদি এক জায়গায় করা হয় আর আমার আল্লাহর প্রতি ঈমানকে এক জায়গায় করা হয় তাহলে ঈমানের মূল্যের সামান্যতমও হবে না।


আমার মুরুব্বী বাবাজিরা!

মন লাগিয়ে কথা শুনি। শয়তান আমাদের শত্রু , নিশ্চিত শত্রু । আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে দিয়েছেন। সব সময় ধোঁকা দিতে পারে। ঐ শয়তান থেকে নিজের ঈমান-আমল হেফাযতের জন্য চেষ্টা, মেহনত, মুজাহাদা করা দরকার।


এই চেষ্টা-মেহনত, মুজাহাদা একদিনের নয়, দুই দিনের নয়। এখানে আমার যে সম¯ত্ম যুবক ভাইয়েরা আছে, পর্দার আড়ালে মা বোনেরা আছেন সবাইকে বলবো, এই চেষ্টা-মেহনত, মুজাহাদা হবে মৃত্যু পর্যšত্ম। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ
মৃত্যু আসার আগ পর্যšত্ম এই মেহনত করতে হবে। শুধু রমযানে করালাম। রমযানের পর ঈদের দিন নাচো, হাসো, গান গাও। আমল তো করেছি, রমযানের রোযা রেখেছি। এখন যা ইচ্ছা তাই করবো।

না ভাইয়েরা! পবিত্র রমযানে আমার আল্লাহর যে হুকুম ছিল, রমযানের পরেও আমার আল্লাহর সেই হুকুম আছে। সতর্ক হও। ঈদের দিন গুনাহ করা যাবে না। ঈদের পরের দিন মেলা, নাচ-গান করা যাবে না।
নেশা-জুয়া, নাচ-গান, আনন্দ উল্লাস সহ যে কাজগুলো আল্লাহ তাআলা অপছন্দ করেন তা করা যাবে না। কখনোই করা যাবে না।


গতকাল ঢাকায় ঈদের নামাযের আগে ভাইদেরকে বলেছি। এখানে হযরত উলামায়ে কেরাম আছেন, আপনারা কথাটি শুনে উম্মত-কওমকে সতর্ক করার চেষ্টা করবেন। কিছু কিছু সময় ও জায়গা আছে এমন যে, সবাই একেবারে হাল ছেড়ে দেয়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাযত করম্নন। তাহলো অভিভাবক অধিন¯ত্ম ছেলে মেয়েদেরকে কিছু বলে না। অন্য সময় নিষেধ করে, রাগ করে। কিন্তু ঈদের দিন ছেলেমেয়েদেরকে কিছু বলে না। অনেক আলেম সাহেবও কিছু বলেন না। ঈদের দিন ছেলেমেয়েরা কিছু তো করবেই। এই দিন কিছু বলা যাবে না। মুক্ত ছেড়ে দেয়।

মনে হয় যে, ঈদের দিন আল্লাহ তাআলা হুকুম উঠিয়ে নিয়েছেন। এই মানসিকতা আমাদের সবার পাল্টাতে হবে। দিলের মাঝে বসাতে হবে যে, আমার আল্লাহ তাআলার হুকুম সব সময়ের জন্য আছে। সতর্ক হও। শয়তান আমাদের মনের মাঝে বিশাল বড় বুলি লাগিয়ে দিয়েছে যে, ঈদের দিন, এর পরের দিন কিছু বলা যাবে না। ছেলেমেয়েরা আনন্দ-উলস্নাস করবেই। আনন্দ ভিন্ন জিনিস আর গুনাহ ও নাফরমানি ভিন্ন জিনিস।


ইসলামে আনন্দ আছে কিন্তু শরীয়তের সীমান ও গ-ির ভেতরে থেকে। নামায বাদ দিয়ে ঢোল-তবলা, নাচ-গান? ঈদ মেলার ইসলামে অনুমতি নেই। ঈদ উপলক্ষ্যে নাচ-গান, মেলা, জুয়া হারাম-নাজায়েয। এসব হচ্ছে কেউ কিছু বলে না। এমনকি মুরম্নব্বীরাও কিছু বলে না। সমাজপতি যারা আছে তারাও কিছু বলে না। প্রশাসন পর্যšত্ম কিছু বলে না। এভাবে চলতে চলতে ক্রমান্বয়ে অবচেতনভাবে আমার আপনার ঈদ হয়ে যাচ্ছে ইহুদী খ্রিস্টানদের উৎসবের দিনের মতো।


খ্রিস্টানদের বড় দিনে আনন্দ উৎসব হিসাবে যে পরিমাণ মদ ব্যবহার হয় পুরো পৃথিবীতে সারা বছর ঐ পরিমাণ মদ ব্যবহার হয় না। কেনো? বড় দিন। সব উন্মুক্ত করে দাও। বড় দিনে কোনো পাপ নেই- যে যা মন চায় করো। বড় দিনে যত ইচ্ছা মদ পান করো, ব্যবহার করো। বড় দিনে মদ পানকে তাদের ধর্মের সংস্কৃতি বানিয়ে নিয়েছে। বড় দিনে এক হলো মদের ব্যবহার আরেক হলো নারীদের সাথে অবাধ মেলা মেশা, যিনা ব্যভিচারের অনুমতি। কোনো বাধা নিষেধ নেই। তাদের ধর্মের খারাপ ও অশস্নীল দিকগুলো কীভাবে মানুষের মধ্যে ব্যাপক করা যায়। যিনা ব্যভিচার যে মন্দ কাজ এই মন্দ কাজের ভাবনা কীভাবে মানুষের দিল থেকে বের করা যায়? এই যিনা ব্যভিচারকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা যায় এই জন্য বানিয়েছে ‘ভালোবাসা দিবস’।


ভালোবাসা দিবস! তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ভালোবাসা দিবসের অর্থ কী? অন্য দিন ভালোবাসা থাকবে না? বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা, স্বামী-স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা, ভাই ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা, সšত্মানের প্রতি ভালোবাসা অন্য দিন থাকবে না? তাহলে এই ভালোবাসার অর্থ কী? এর অর্থ হলো নোংরামী ভালোবাসা। আসল ভালোবাসা তো সব সময় থাকবে।


একজন মুমিনের প্রতি আরেকজন মুমিনের ভালাবাসা কি বিশেষ কোনো দিন, নাকি সব সময়ের জন্য। ধনী গরিব একে অপরের প্রতি সহানুভূতি থাকবে, একি বিশেষ কোনো দিন নাকি সব সময়ের জন্য? স্বামী-স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা, সুসম্পর্ক থাকবে এটা বিশেষ কোনো দিনে নয়। সব সময়ের জন্য। ‘দিবসের’ তরজমা ও অর্থ এটাই বুঝায় যে, এই কাজটা শুধু ঐ সময় হবে।


কথায় কথা আসল, তাই বলছি। মা-বাবা মারা গিয়েছে। তাদের জন্য দুআ করবে। তাই ‘মৃত্যু দিবসে’ দুআর আয়োজন। বাবা মারা গিয়েছেন অমুক দিন। ঐ দিন মৃত্যু দিবস। সেদিন অন্য কিছু করা যাবে না। ভালো কাজ করো। বাবার জন্য কুরআন খতম করো, দুআ করো। কারণ আজ বাবার মৃত্যু দিবস। বাবার জন্য দুআ কেবল ঐ দিনেই করবে। অন্য দিন করবে না। বুঝে থাকলে বলেন, বাবার জন্য দুআ কি একদিনে হবে, নাকি সব দিন হবে? কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا


এই শব্দগুলো বলে আল্লাহ তাআলার কাছে মা বাবার জন্য দুআ করো। সব সময় দুআ করো। মৃত্যু দিবস করার অর্থ হলো একদিন তাদের জন্য দুআ হবে। ভালোবাসা দিবসের মতলব হলো, একদিন মহব্বত হবে আর অন্য দিন তাদের জন্য শত্রম্নতা। এ রকম প্রত্যেক দিবসের মতলব হলো ঐ দিবসে হবে, অন্য দিনে হবে না। ইসলামের কথা হলো ভালো কাজ কোনো দিবসে হবে না। ইসলামের দর্শন হলো খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা কোনো দিবসে হবে, মাসে হবে না, সব সময়ই বিরত থাকতে হবে।


এই ‘দিবস পালন’ ইত্যাদি সব কথা আমার আপনার মনে ভেতরে দিয়ে আমাদের জীবন নষ্ট করছে শয়তান। মানসিকতা পাল্টাচ্ছে যুবকদের, বৃদ্ধদের। মানসিকতা পাল্টাচ্ছে ঈমানওয়ালাদের, আমলওয়ালাদের।


যদি কোনো আলেম সাহেব, দরদী রাহবার, মুরম্নব্বী ঈদের দিন এই সম¯ত্ম (পাপ) কাজ করতে নিষেধ করে তাকে বলা হয় কট্টোরপন্থী। এই লোক সমাজ-সামাজিকতা বুঝে না। সব সময় ছয় নম্বরের কথা, নামাযের কথা, হজ-যাকাতের কথা বলে। আজকে আনন্দের দিন, ঈদের দিন। আজকে কেনো নামাযের কথা বলে? যদি কেউ বলে তাহলে তার প্রতি ড়্গপ্তি হয়।


আমি আপনাদের এখানে অনেক আগে এসেছি। প্রায় ১১ টার দিকে। হুযুররা বয়ান করছিলেন। আমিও দ্বীনি বিষয়ে আলেমদের সাথে কথা বলছিলাম, মুযাকারা করছিলাম। আল্লাহ তাআলা আজকের এই মজলিসকে কবুল করে নিন।


ধারণা থেকে একটি কথা বলছি, আপনারাও বলেন, আজকের এই সময়ে বাংলাদেশের কয় জায়গায় মাহফিল হচ্ছে? কোথাও মাহফিলের কেনো আলামত নেই। আজকে বলতে পারবেন না যে, বাংলাদেশের আর কোথাও মাহফিল হচ্ছে। পুরো বাংলাদেশে মিলে চার পাঁচ জায়গায় হয় কিনা সন্দেহ? অন্য সময় নেত্রকোণায় আসার সময় রা¯ত্মায় গণনা করেও শেষ করা যায় যে, এত জায়গায় মাহফিল হচ্ছে। আজ কেনো অন্য জায়গায় মাহফিল নেই?

মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি- ঈদের পর আজ কিসের মাহফিল? ঈদের পরের দিন আবার কিসের ঈদ। মানসিকতা পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমি আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করি, আলস্নাহ তাআলা আজকের এই মাহফিলকে কবুল করে নিন।


শয়তান যেই যেই জায়গা দিয়ে আমাদেরকে ধোঁকা দিতে চায় ঐ সম¯ত্ম জায়গার অনেকগুলো ছিদ্র। শায়খুল ইসলাম হযরত মাওলানা সায়্যিদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ. তার মাকতুবাতের এক জায়গায় লিখেছেন, শোনো! শয়তানের এত এত জাল, এত ছিদ্র আছে যে, তুমি সারাড়্গণ সেগুলো বন্ধ করতে থাকলেও দেখবে কিছু ছিদ্র ও জাল রয়ে গেছে। এত জাল শয়তানের রয়েছে যে, আপনার আমার বুঝার বাইরে। তা থেকে বেঁচে থাকা অনেক কঠিন। তবে আল্লাহ যার প্রতি রহম করেন সে বাঁচতে পারবে।

ইরশাদ হয়েছে, إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّي
এই জাল থেকে মুক্তির উপায় কী? আল্লাহ তাআলা যদি কারো প্রতি দয়া করেন তাহলে তো ভিন্ন বিষয়। যদি তিনি দয়া না করেন তাহলে এই জাল থেকে বের হয়ে আসা শুধু আপনার জন্য নয়, এই এলাকার লোকদের জন্য নয়, আমি মনে করি আমার জন্যও অনেক অনেক কঠিন।


এই জালের মধ্যে আরেকটি জালের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অনুবাদ : হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমার বেদি ও জুয়ার তীর এ সবই অপবিত্র, শয়তানি কাজ। সুতরাং এসব পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর। (সূরা মায়েদা, আয়াত ৯০)
আল্লাহ বলেন, হে ঈমানওয়ালা! আমি আপনি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি কিনা? সকলেই বলি, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। যারা কালিমা পড়েছে, আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে তাদেরকে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে কালিমাওয়ালা, মুমিন-মুসলমান! শোনো শয়তান তোমাদেরকে কীভাবে ধোঁকা দেয়- শয়তান ধোঁকা দেয়- মদ, নেশা, ইয়াবা, বিড়ি-সিগারেট আরো এ ধরনের জিনিসগুলো একটি খাও, মজা আছে। এ ধরনের জিনিসগুলোর প্রতি উদ্বুদ্ধ করে, উৎসাহিত করে। এভাবে সে বিড়ি-সিগারেট, ইয়াবা ও মাদক পানে মানুষকে ধোঁকা দেয়।


শয়তান তার জায়গা থেকে নিজেকে খুব বুদ্ধিমান মনে করে। একজন মানুষকে কীভাবে ধোঁকা দিতে হয় এ ব্যাপরে সে অত্যšত্ম পটু। নামাযীকে কীভাবে ধরতে হবে এ ব্যাপারে তার জানা আছে, বেনামাযীকে কীভাবে ধরতে হয় সেটাও তার অভিজ্ঞতা আছে। মহিলাকে কীভাবে বলতে হয় সেই কৌশল তার জানা আছে, পুরুষকেও ধোঁকা দেওয়ার কৌশল তার ভালো আয়ত্ত করা আছে। ছোট বাচ্চাকে বলার কৌশলও তার আয়ত্ত আছে। মানুষকে জাহান্নামী বানানোর সকল কৌশল শয়তান জানে এবং প্রয়োগ করে।
শয়তান মানুষকে বুঝায় যে, ইয়াবার একটি ট্যাবলেট খেলে ভালো লাগবে, মন শাšত্ম হবে। বেশি নয়, একটা খাও। বেশি দাম নয়, স স্তা, সহজলভ্য- সব দোকানে পাওয়া যায়। মনকে ফ্রেশ রাখবে।


একটি ঘটনা মনে আসল, জালের ভেতরে একটি বাঘ আটকা পড়ছে। কোনোভাবেই বের হতে পারছে না। যত বড়ই বাহাদূর হোক না কেনো? খাঁচায় আটকা পরলে বের হতে পারে না। বাঘটি ড়্গুধায় খুব হাহুতাশ করছে। খাঁচার সামনে দিয়ে একটি ইঁদুর যাচ্ছে। ইঁদুরকে অনুরোধ করছে যে, ভাই! একটু উপকার করো। এতে অনুনয় বিনয় করে বলার কারণে ইঁদুরের দয়া হলো, মনে মনে ভাবছে, গুরম্ন মশায় আটকা পড়ছে একটু উপকার করি। বসে আ¯েত্ম আ¯েত্ম সে তার ধারালো দাত দিয়ে জাল কেটে দিয়েছে। বাঘ বের হয়ে এল। ড়্গুধার্থ বাঘ এখন ইঁদুরকেই খেতে চাইল। বাঘ বলল, এখন আর ওয়াজ চলবে না। আমি ড়্গুধার্থ, খাবারের প্রয়োজন। তোমাকে আমি খাব। গ্রাম্য একটি কথা আছে- চোরে শুনেনা ধর্মের কাহিনী। ইঁদুর বিভিন্ন কথা বলে নিজের উপকারের কথা শুনিয়ে কৌশলে বাঘকে আবার খাঁচার ভেতরে ঢুকাল।


ভাই ও দোস্ত !

শয়তান, আমাকে আপনাকে, যুবক-বৃদ্ধকে দুনিয়ার সকল মানুষকে কৌশলে বুঝাচ্ছে যে, একটা ট্যাবলেট খাও। আপনাদের এই নেত্রকোণায় তো ইয়াবা নেই? আছে আছে। দোকানে দোকানে পাওয়া যায়। সারা বাংলাদেশে ইয়াবার সয়লাব। বিশেষ করে সীমাšত্ম এলাকাগুলোতে এর প্রভাব বেশি। যারা বানায় তারা মুসলমানের বন্ধু না শত্রম্ন? তারা মানবতার বন্ধু না শত্রম্ন? যারা বিক্রি করে তারা বন্ধু না শত্রম্ন? তোমার যে দো¯ত্ম বলে বুঝিয়ে খাওয়ায়, মনে করবে সেও তোমার শত্রম্ন, তোমাকে নষ্ট করতে চাচ্ছে। শয়তানেরর জালের মধ্যে আটকাতে চায়। যদি কেউ একবার এই নেশার জালে আটকা পড়ে তার জীবন শেষ। ঈমান-আমল ধ্বংশের মুখে পড়ে যায়। তার জীবন শেষ, আমল শেষ। বর্তমান সারা বাংলাদেশে ক্যান্সার, কিডনী সমস্যা, লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগী তৈরি হচ্ছে কেনো? ভেবে দেখার বিষয়।

কীটনাশক ঔষধ যেমন পোকা ধ্বংস করে, ইয়াবা-নেশা যুবকের চেহারার লাবন্যতা নষ্ট করে
আপনাদেরকে জিজ্ঞাসা করি, এই যে দেখা যায় এগুলো কিসের ড়্গতে। ধান ড়্গতে। তাতে পোকা ধরে না? তো পোকা দূর করার জন্য আপনারা কী ব্যবহার করেন? কীটনাশক ঔষধ। এই ইয়াবা ট্যাবলেটও মানুষের জীবননাশক। ধান ড়্গেেতর কীটনাশক যেমন ধানের পোকা ধ্বংস করে তদ্রম্নপ ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ ও নেশা মানুষের জীবননাশক। মানুষের যিন্দেগী নাশক। তাই আমার কথাটি মিলিয়ে দেখবেন, যারা ইয়াবা, নেশার সাথে জড়িত, ইয়াবা খায় তাদের চেহারার যৌবনের লাবণ্যতা নষ্ট হয়ে যায়। কারণ, ইয়াবার বিষ ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা এত গভীরে না ঢুকে তাদের চেহারাটা দেখেন।


মহব্বতের জায়গা থেকে বলছি, মাঝে মাঝে কোনো যুবকের চেহারা দেখে ভাবি, তার চেহারা এমন দেখাচ্ছে কেনো? এই বয়সে চেহারাতে যৌবনের জৌলুস থাকবে। যুবক না হয়ে সে যদি বৃদ্ধ হত, আর চেহারাতে ঘাটতি দেখা যেত তাহলে জিজ্ঞাসা করতাম, আপনার ডায়াবেটিকস আছে কিনা? এই রোগে চেহারায় ঘাটতি দেখা যেতে পারে।


রোগ তো ব্যক্তির কোনো অপরাধ নয়। যেকোনো কারণে তা হতে পারে। বৃদ্ধ মুরম্নব্বীদের যদি স্বাস্থ্যহানী দেখা দেয়, শুকিয়ে যায়, চোখ নিচে চলে যায়, গাল ভেঙ্গে যায় তাহলে কোনো অপরাধের কারণে নয়। বুঝতে হবে তার ডায়াবেটিকস বা অন্য কোনো রোগ আছে। কিন্তু যুবক যদি শুকিয়ে যায়, চোখ নিচে চলে যায়, গাল ভেঙ্গে যায় তাহলে বুঝতে হবে রোগের কারণে নয়, অন্য কোনো জায়গায় সমস্যা আছে।


অনেক সময় আমি জিজ্ঞাসা করি, হে যুবক! তোমার চেহারা এমন দেখা যায় কেনো? সে বলে হুযুর বিভিন্ন পেরেশানিতে আছি, পারিবারিক ঝামেলায় আছি। আসল সমস্যা এগুলো নয়, আসল সমস্যা হলো ইয়াবা, মদ ও নেশা।

আরে যুবক! তুমি তো ধ্বংসের বীজ নিজের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছ।


এই যে দেখেন আপনাদের এখানে একটি লাউ গাছ। তার পাতা ও ডগাগুলো কেমন জানি শুকিয়ে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখেন গাছটির গোড়া হয়ত কাটা পড়েছে কিংবা নষ্ট হয়ে গেছে। গোড়া নষ্ট হয়েছে তা দেখি অথবা না দেখি, প্রমাণ হলো ঐ যে তার পাতা ও ডগা শুকিয়ে যাচ্ছে। ঠিক ইয়াবাও মানবগোড়ায় দেওয়ার কারণে যুবকের চেহারা, জীবন-যৌবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।


আল্লাহ তাআলা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, فَاجْتَنِبُوه সাবধান হও, সতর্ক হও ইয়াবা থেকে, মদ-নেশা থেকে। কারণ, رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ ُ এগুলো হলো শয়তানের কাজ, নাপাক কাজ। যদি তোমরা এগুলো থেকে বিরত থাকতে পারো তাহলে তোমাদের জীবন কামিয়াব।

ইরশাদ হয়েছে, لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ কামিয়াবির জীবন কে না চায়? আমরা সবাই কামিয়াবির যিন্দেগী চাই। কাজেই ইয়াবা, মদ-নেশা থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন।


মদ ও নেশার মাধ্যমে শয়তান তোমাদের কী ড়্গতি করে, পবিত্র কুরআনের আরেকটি আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ
অনুবাদ : শয়তান তো এটিই চায় যে, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শত্রম্নতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হোক এবং আল্লাহ তাআলার স্মরণ ও সালাত থেকে তোমরা বিরত থাকো। সুতরাং এখনো কি তোমরা এগুলো থেকে বিরত থাকবে না?’ (সূরা মায়েদা, আয়াত: ৯১)
শয়তান মদ-নেশা এবং জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে কলহ-বিবাদ সৃষ্টি করতে চায়।


আপনাদেরকে একটু জিজ্ঞাসা করি, দেখি আপনাদের থেকে জবাব কী আসে? কোনো স্বামী যদি নেশাগ্র¯ত্ম হও, জুয়া খেলে তাহলে ঐ স্বামীর সাথে তার স্ত্রীর সম্পর্ক খুব ভালো থাকে? মোটেও ভালো থাকে না। রোযানা ঝগড়া চলে। কারণ, নেশা করার কারণে স্বামীর মাথা নষ্ট হয়ে আছে। তাই প্রত্যেহ স্ত্রী-সšত্মানকে গালি-গুলুজ, মারপিট করতে থাকে। তার তো মাথা ঠিক নেই।

আল্লাহ তাআলা ঐ কথাই কুরআনে বলেছেন, মদ- নেশা এবং জুয়ার মাধ্যমে শয়তান তোমাদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ ও শত্রম্নতা সৃষ্টি করে রাখে। যে নেশাগ্র¯ত্ম তার সাথে স্বীয় স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো নেই, বাবা-মায়ের সম্পর্ক ভালো নেই, ভাইবোনের সম্পর্ক ভালো নেই। ছেলেমেয়ের সাথে, সমাজের লোকসহ কারো সাথে তার সম্পর্ক ভালো নেই। এভাবে সামাজিক বন্ধন ও শৃঙ্খলতা নষ্ট হয়। এই হলো এক বিষয়।


দ্বিতীয় বিষয় হলো এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ওয়াজ মাহফিল শুনতে যায় না। দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতে যুক্ত হয় না, আল্লাহওয়ালাদের কাছে যায় না। যিকিরের মজলিসে বসে না। ভালো কোথাও যেতে চায় না। আল্লাহকে ডাকে না। নেশা তাকে ‘আল্লাহ’ বলা ভুলিয়ে দেয়।


তৃতীয় হলো, নেশাগ্র¯ত্ম ব্যক্তি নামাযে যায় না। শয়তান নেশার মাধ্যমে ব্যক্তিকে বেনামাযী বানায়। সুতরাং এই জায়গার আয়াতের আলোচনায় আমরা এ কথা বুঝতেছি যে, বিশেষ করে যুবক সমাজ নামায থেকে বিরত থাকার অন্যতম কারণ হলো, ইয়াবা, নেশা, মদ। আল্লাহকে ভুলে যায় নেশার মধ্যে পড়ে যাওয়ার কারণে। ঝগড়া-ঝাঁটিতে জড়ায় নেশায় জড়িয়ে পড়ার কারণে। কোনো যুবক যদি নেশা থেকে বিরত থাকে তাহলে আল্লাহর ফজলে তার লাইন ঘাট ক্লিয়ার-পরিষ্কার রইল।


এখন যে যুবকের লাইন পরিষ্কার সুতরাং দাওয়াত ও তাবলীগের ভাইদের হালকা মেহনতে সে আমলে যুক্ত হয়ে যায়। ওয়াজ মাহফিলে আলেমগণ এই যুবকের পেছনে মেহনত করলে সে লাইনে উঠে যায়। এভাবে সে আমল-আমল হেফাযতের লাইনে উঠে যাবে। সে তো সুস্থ।


আপাতত বুঝানোর জন্য বলছি, অসুস্থ মানুষ দুই ধরনের। ক. হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, ডাক্টার দেখে বলল, যে রোগ হয়েছে ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। খ. আরেক ধরনের রোগীকে দেখে ডাক্টার বলল, না এই রোগ ভালো হওয়ার নয়। একে হাসপাতালে রেখে কোনো লাভ নেই। সে সুস্থ হবে না। আপনারা তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। চিকিৎসা করলে লাভ হবে না, যেকোনো সময় সে দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবে।


ঠিক আল্লাহর যে সম¯ত্ম বান্দারা এই সমস্ত অপরাধ ও গুনাহ থেকে বিরত থাকে তার লাইন ক্লিয়ার থাকে। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে নামায পড়ে, একটু উনিশ বিশ করে। ইনশাআল্লাহ এদের পেছনে সামান্য মেহনত করলেই ঠিক হয়ে যাবে।


আর যে ব্যক্তি বহুবালু ও গহীণ গর্তে পা দিয়েছে সে তো চোরাবালির মধ্যে আটকা পড়েছে। চোরা বালু হলো নরম কাদামাটির মধ্যে আটকা পড়া। এখন যত নড়বে তত ঘাঢ়বে, তলে যাবে।


বুঝানোর জন্য উদাহরণ হিসাবে বললাম, আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বুঝার তাওফীক দান করম্নন। সেই চোরাবালু থেকে জাগতিকভাবে আমি আপনি উঠিয়ে আনতে পারবো না। যে উঠিয়ে আনতে যাবে সে ফিরে আসতে পারবে না। কারণ যেখানে সে আটকা পড়েছে যতই চিৎকার করম্নক- মা, বাবা, আত¥ীয়-স্বজন নীরব দর্শক হওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারবে না।

ভাই ও দোস্ত! আল্লাহহ তাআলা আমাকে আপনাকে সব ধরনের ধোঁকা থেকে বিরত থাকার তাওফীক দান করুন।


পূর্বে বলা হয়েছে, আমরা নিজের ঈমান ও আমল ঠিক রাখার জন্য চেষ্টা করবো। তৃতীয় নম্বর হলো ইয়াবা, মদ-নেশায় অভ্য¯ত্ম হয়ো না। আর তা বিড়ি সিগারেট থেকেই শুরম্ন হয়। দরকার নেই বিড়ি সিগারেট খাওয়া। এর মধ্যেও এক ধরনের দুর্গন্ধ আছে। দুর্গন্ধের দ্বারা রহমতের ফেরেশতা দূরে চলে যায়। ঐ সিগারেট এবং বিড়ির প্যাকেটেই লেখা আছে, ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ড়্গতিকর।


যারা ড়্গতে-খামারে কাজ করে তাদের জন্য ধুমপান সাময়িকভাবে শরীরে প্রফুলস্নতা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু বা¯ত্মবে তা প্রফুলস্নতা নয়, শরীরের এনার্জি নয়। তা তো ক্যন্সার তৈরি করে। শরীরকে ধ্বংসের দিকে ঢেলে দেয়। সুতরাং তিনটি কথা বললাম, ঈমান হেফাযত করার চেষ্টা করবো, আমল হেফাযত করার চেষ্টা করবো এবং শয়তানের সকল জাল বিশেষ করে বিড়ি-সিগারেট, মদ-নেশা, ইয়াবা ইত্যাদি থেকে সমাজের সর্ব¯ত্মরের লোকদেরকে বিরত রাখার চেষ্টা করবো। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই কথাগুলো মানার তাওফীক দান করম্নন। নিজে বিরত থাকব অপর ভাইকে বিরত থাকার জন্য পিয়ার-মহব্বতের সাথে বলবো।


এই মজলিসে যারা আছেন, বুঝে হোক অথবা না বুঝে হোক; ভুলে নেশার প্রতি অভ্যাস তৈরি হতে পারে, এরপরেও আজ থেকে বিড়ি-সিগারেট খাবেন না, এমন কারা আছেন একটু হাত তুলেন। যারা খান না তারা তো খাবেন-ই না, তারাও হাত তুলেন। বাকীরাও আজ থেকে খাবেন না তো ইনশাআল্লাহ! আল্লাহ সবাইকে তাওফীক দান করম্নন। আমীন।


যেহেতু কয়েকজন ভাই বলেছেন, আমরা খাই না। তাদেরকে বলছি, শুনেন। একজন পাঁচওয়াক্ত নামায পড়েন, খেয়াল করেন, উল্টো উত্তর দিয়েন না। আলেম সাহেব বয়ানে বললেন, ভাইয়েরা! আজ থেকে নামায কাযা করবেন না। তো যারা নামায আদায় করে তারা বলল, আমরা তো নামায পড়েই থাকি। তাহলে কি নামায কাযা করবেন? পড়া ছেড়ে দেবেন? কথার অর্থ হলো আর যেনো কাযা না হয়। আপনার আমার চেষ্টা মৃত্যু পর্য ন্ত।


কেউ নিরাপদ নয় মৃত্যুর আগ পর্যšত্ম। আমি আপনি যোহরের নামায আদায় করলাম, আছরের নামায আদায় করবো নিশ্চিত বলতে পারি না। হতে পারে শয়তানের ধোঁকায় তা পড়তে পারলাম না। তাই সব সময় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া যে, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করম্নন। মৃত্যু পর্যšত্ম ঈমান-আমল হেফাযত করার তাওফীক দান করম্নন। এই চেষ্টা আমরা সকলেই অব্যাহত রাখবো ইনশাআল্লাহ।


ওয়াদা ঠিক রাখার চেষ্টা করবেন, ঈমান হেফাযত করবেন, আমল হেফাযত করবেন। নেশা, ধুমপান এই সব থেকে সবাই বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। এতে আমাদের দুনিয়া ভালো হবে, আখেরাতেও ভালো। আল্লাহ বলেন, যদি কামিয়াবী চাও আল্লাহর হুকুম মেনে চলো।

আল্লাহ তাআলা আপনাদের আসা যাওয়া বসাকে কবুল করে নিন।

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment