Home ইসলামপ্রবন্ধ । নারীবাদীদের ভেতর বাহির

প্রবন্ধ । নারীবাদীদের ভেতর বাহির

by MD JUNAYED SHEIKH
প্রবন্ধ । নারীবাদীদের ভেতর বাহির

জুমাবার মুসলমানদের আবেগের দিন, সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। গত শুক্রবার নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা কমিটি দিনটি বেছে নিল বেশ্যা স্লোগানে মানিক মিয়া এভিনিউকে রাঙা করতে। আমরা তো জানতাম দেশটা ৯২% মুসলমানের কিন্তু জাহাজটা কখন যে নিচ দিয়ে ফুটো হয়ে যাচ্ছে টের পাচ্ছি না।

বাংলাদেশ মানে ওলী আউলিয়াদের দেশ,পূন্যাত্মাদের দেশ। এ দেশে মসজিদ মাদ্রাসার উসিলায় ধর্মপ্রাণ বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস যারা শ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলামকে মনেপ্রাণে ভালোবাসেন,আমল করেন, আখেরাতে ভালো থাকার আশায় পার্থিব অনেক কিছু বিসর্জন দেন। ব্রিটিশরা প্রায় দুইশো বছর উপমহাদেশ শাসন করেছে, মুসলমানদের হৃদয় থেকে ইসলামের নাম নিশানা মুছে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র করেছে কিন্তু সফল হয়নি কিন্তু তাদের মিশন থেমে যায়নি।

মুসলিম উম্মাহকে অন্তঃসার শূন্য করতে,ইসলামী চেতনা বিলুপ্ত করতে তারা একের পর এক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, নিচ্ছে। মোটাদাগে বলা যায়, বর্তমানের নারীবাদী আন্দোলন সেই ব্রিটিশ আমেরিকা ও পশ্চিমা প্রেসক্রিপশনের ফসল।

গত ( ১৬-৫-২৫) তারিখ এই ইস্যু নিয়ে অনেকেই কথা বলেছেন তবে প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হুসাইনের কথাগুলো দারুণ লেগেছে। তাঁর ফেসবুক পোস্ট থেকে লেখাটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরলাম ” নারী অধিকারের নামে কারা রাস্তায় নেমেছে সেটা প্লেকার্ড দেখে বুঝে নেন!!! আমার মা তার বাবার বাড়ির সম্পত্তির ভাগ পেয়েছে আমার বোনেরাও আমার বাবার সম্পত্তির ভাগ পেয়েছে৷ তাদের সম্পত্তি পাবার অধিকার ইসলাম দিয়েছে৷ আমার বোন আমেরিকাতে থাকে, চাকরি করে এবং ফুল পর্দাও করে৷ তার বোরকা-হিজাব পরে কাজে যেতে কোন সমস্যা হয় না৷ দৌলতদিয়া যাদের জন্ম তাদের বাবা কে সেটা জানে না যে কারনে তাদের বাবার বাড়ির হিস্যা পায়নি, একেকদিন একেক জামাই ভোগ করে তাই স্বামীর সম্পত্তিও পায়নি যে কারনে এখন “তারা বে’শ্যা, বুঝে নেবে হিস্যা৷” অতএব, যারা দৌলতদিয়া বড় হয়েছেন তারা সবাই দলে দলে সমাবেশে যোগ দিন৷ বাংলাদেশের সাধারন নারীরা অনেক ভালো আছে, তারা বে’শ্যা হতে চায়না, বে’শ্যাদের সাথে রাস্তায় গিয়ে হিস্যাও চায় না৷ ইসলমের বিধান অনুযায়ী তাদের পাওনাগুলো শতভাগ বুঝিয়ে দিলে তারা আরও ভালো থাকবে ৷

এখন কিছু প্রশ্ন । নারীদের প্ল্যাকার্ড নিয়ে কারণ যেকোনো আন্দোলনে প্ল্যাকার্ড খুব গুরুত্ববহ।

১) আমরা সবাই বেশ্যা বুঝে নিব হিস্যা জানতে ইচ্ছে করে, গতকাল মানিক মিয়া এভিনিউতে বেশ্যারা কি একত্রিত হয়েছিল?

২) পাহাড় থেকে সেনাশাসন হঠাও বেশ্যাদের মজলিসে পাহাড়ের সেনাশাসন ইস্যু কেন আসলো? নিশ্চয়ই ডাল মে কুচ কালা হে

৩) ট্রান্স মুক্তিই নারীবাদের মুক্তি বেশ্যাদের এই আন্দোলন কি তাহলে ট্রান্সজেন্ডারের বৈধতার জন্য?

৪) Fuck Cis tem ( সংক্ষেপে যারা বিকৃত যৌনাচার অস্বীকার করে তাদের হো*গা মারো) বিষয়টি কি স্পষ্ট নয় যে, যারা এলজিবিটিকিউ আন্দোলন অস্বীকার করে তাদের কন্ঠ থামিয়ে দাও। এর মানে তারা সরাসরি ইসলামকে অস্বীকার করছে না?

৫) নারীর যৌন স্বাধীনতা নিশ্চিত কর কে স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে? কোন ধরনের যৌন স্বাধীনতা দরকার? এগুলো স্পষ্ট করলে ভালো হত। এ সব প্ল্যাকার্ড দেখে আমি আসলে স্বাভাবিক অবস্থায় নাই। হায়! কোথায় আছি আমরা? এটা কি ওলী আউলিয়াদের বাংলাদেশ?

৬) পিতৃতন্ত্র,ধর্মীয় উগ্রবাদ, সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক। তাহলে এবার স্পষ্ট হল তো,নারীর মৈত্রী যাত্রার নামে তারা গোটা ইসলাম ধর্মকেই বাদ দিতে বলছে!

এবার আসুন , কিছু ব্যক্তিকে জানি যারা নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’র নেতৃত্বে ছিল

১) হোচিমিন ইসলাম

দীর্ঘদিন ধরে নারী আন্দোলনের নামে সমকামিতার মিশনে মাঠে ময়দানে সরব রয়েছেন। শেখ হাসিনা আমলে গণভবনে গিয়ে হাস্যোজ্জল চেহারায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে এসেছিলেন। আর কিছুদিন আগে নারী দিবসে সে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে “অদম্য নারী” পুরষ্কার নিয়েছে অথচ হো চি মিন ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছে, ‘আমার শরীরটা পুরুষের ছিল, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমি নিজেকে নারী ভাবতাম। অবশেষে অস্ত্রোপচার করে পুরুষ থেকে নারী হয়েছি, গোপন করার কিছু নেই। এখন আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে একজন নারী।’ ( প্রথম আলো)

২) মার্জিয়া প্রভা

“নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা” আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া একজন হচ্ছেন মার্জিয়া প্রভা। সে এসেছিল নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। অথচ ৩রা আগস্টেই মৌলভীবাজারের ওই বাসায় সে তার বান্ধবীর ধর্ষণকারীদের সাহায্য করেছিল। তার সাহায্যের কারণেই নির্মমভাবে ধ*র্ষিত হয়েছিল তার নিজ বান্ধবী। তারপর বান্ধবীকে সবাই মিলে ব্ল্যাকমেইলও করেছিল যাতে বিষয়টা কাউকে জানাতে না পারে। এই মার্জিয়া প্রভার নেতৃত্বে আজকের আন্দোলনে সবাই প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়েছে- “আমরা সবাই বেশ্যা, বুঝে নেবো হিস্যা।” এটাই হচ্ছে মার্জিয়া প্রভা নামক তথাকথিত নারীবাদীদের স্লোগান। এরা নারীদের সুরক্ষা দিতে এসে বেশ্যা নামক হীন শব্দ ধারণ করতে বলে।

৩) ডা.তাসনুভা ।

তাঁর সম্পর্কে সাংবাদিক ইলিয়াস হুসাইনের ফেসবুক পোস্ট বেশ গ্রহনযোগ্য। কারণ সহকর্মী বলে কথা। দেখুন ইলিয়াস হুসাইনের মতামত, “কালকে যেসব স্বঘোষিত বে’শ্যরা মাঠে নেমেছিলো তাদের মধ্যে হঠাৎ একজনকে দেখলাম এই ডা. তাসনুবা৷ তিনি আমার সাবেক সহকর্মী ৷ একুশে টিভির সংবাদ উপস্থাপিকা ছিলেন তিনি ৷ একইসাথে আমাদের নিউজ রুমের তিনজনের সাথে শুইতেন! যতোটুকু মনে পড়ে তার স্বামীও ছিলেন একজন ৷ অফিসে যে তিনজনের কথা আলোচনা হতো এর বাইরেও হয়তো অগণিত খাট যোদ্ধা তার খাটে যেতেনে কিন্তু এরপরেও তিনি আরও যৌনতার স্বাধীনতা চান৷ আমার প্রশ্ন, আপু মোট ক’জন হলে আপনি স্বাধীন হবেন?”

প্রিয় পাঠক! নারীর নামে মৈত্রী যাত্রায় নারী ছাড়া সবই ছিল, ইন্টারসেক্স, লগবটক , ট্রান্স, বেশ্যার হিস্যা , এমনকি পাহাড়ে সেনা শাসন প্রত্যাহার ও ছিল। আবার ডানা কাটা পরীর সার্কাস ও ছিল। সব মিলিয়ে আমার মতামত হচ্ছে এই নারীবাদী আন্দোলন দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ ।

সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশবাসী যদি সার্কাস দেখার মতো সবকিছু বিনোদন মনে করে দেখতে থাকেন, তাহলে পুরো জাতিকে এর চরম খেসারত দিতে হবে।

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment