Home আন্তর্জাতিকগাজার ১৪ এলাকা খালি করার নির্দেশ ইসরায়েলের

গাজার ১৪ এলাকা খালি করার নির্দেশ ইসরায়েলের

by MD JUNAYED SHEIKH

২২ মে গাজা সীমান্তে অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ট্যাংক। ছবি : এএফপি


ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ১৪টি এলাকা থেকে মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ সতর্কতার কারণ তারা সেখানে নতুন করে অভিযান জোরদার করেছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে।

আরবি ভাষায় দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এদিন জানায়, তারা গাজার উত্তরের ১৪টি এলাকায় ‘তীব্র শক্তি’ নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে এবং অভিযোগ করে, ‘সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো’ সেখানে সক্রিয়।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায়ও সেনাবাহিনী একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছিল।

তারা জানায়, রকেট হামলার জবাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরে সেনাবাহিনী আবার জানায়, গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে আরো তিনটি রকেট ছোড়া হয়েছে, তবে সেগুলো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডেই পড়েছে।

এই সতর্কতা এমন এক সময় এলো, যখন জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা গাজায় প্রায় ৯০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গ্রহণ করে বিতরণ শুরু করেছে। ২ মার্চ থেকে সম্পূর্ণ অবরোধ জারির পর এটাই প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে ত্রাণ প্রবেশ।

ইসরায়েল সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার পর জাতিসংঘপ্রধানের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক বলেন, ‘জাতিসংঘ কেরেম শালোম ক্রসিং থেকে প্রায় ৯০টি ট্রাক বোঝাই পণ্য সংগ্রহ করে গাজায় পাঠিয়েছে।’ এ ছাড়া গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকার জানিয়েছে, তারা ৮৭টি ত্রাণবাহী ট্রাক পেয়েছে, যা আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ‘জরুরি মানবিক চাহিদা’ পূরণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় একটি ‘অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির’ প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করলেও তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, সেনাবাহিনীর লক্ষ্য পুরো গাজা ভূখণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অভিযান চালিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা ধরে রাখতে মানবিক সংকট এড়ানো প্রয়োজন।

ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাদ্য ও ওষুধের চরম সংকটে পড়ে ফিলিস্তিনিরা বাঁচার জন্য লড়াই করছে। আর ইসরায়েল হামলাও অব্যাহত রেখেছে। গাজা সিটির বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা ৫৩ বছর বয়সী উম তালাল আল-মাসরি বলেন, ‘পরিস্থিতি অসহনীয়। কেউ আমাদের কিছু দিচ্ছে না। সবাই ত্রাণের অপেক্ষায়, কিন্তু আমরা কিছুই পাইনি।

আমরা দিনে কেবল একবার খাবার জোগাড় করতে পারি।’

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় যে পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করছে তা সংকট মোকাবেলার জন্য একেবারেই অপ্রতুল। গাজার আরেক বাসিন্দা হোস্যাম আবু আইদা বলেন, ‘আমি আমার সন্তানদের জন্য দুশ্চিন্তায় আছি। তাদের জন্য আমি ক্ষুধা ও রোগের ভয় করি, বোমাবর্ষণের চেয়েও বেশি।’

ইসরায়েল গত সপ্তাহান্তে হামলা জোরদার করেছে, তারা গাজার শাসক হামাসকে পরাজিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। হামাসের ২০২৩ সালের হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সে হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২১৮ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মিও করা হয়, যাদের মধ্যে এখনো ৫৭ জন গাজায় রয়েছে। তবে এদের মধ্যে ৩৪ জনকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মৃত বলে ধারণা করছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৭৬২ জনে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক।

শেয়ার করুন:

Related Articles

Leave a Comment